ছাত্রলীগ নেতা মো: রাসেল খুনের পরিকল্পনাকারি সন্দেহে বিভিন্ন মামলার আসামী আবুল কাশেম ওরফে মইসা কাশেম (৫৫) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এনিয়ে রাসেল খুনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সে এই খুনের মামলার ৪নং আসামী এবং নির্দেশদাতাদের একজন। তাকে শহরের শালবন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
আবুল কাশেমকে আটক করার পর মঙ্গলবার বিকালে খাগড়াছড়ির আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমানের আদালতে তোলা হলে আদালত তাকে জেলা হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। একই মামলায় আটক শিশু আসামী মো: আকাশ (১৪)কে আদালতে তোলার পর আদালত তাকে গাজীপুর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মো: আকাশ খাগড়াছড়ি নতুন কুঁড়ি ক্যান্টনমেন্ট হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র।
পুলিশ জানিয়েছে, আটক আবুল কাশেম ২০০৬ সালে আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল ইসলাম পিসি হত্যাকান্ডের চার্জশীটভুক্ত আসামী। ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়িতে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় সান্ধ্য আইন ভঙ্গের ঘটনায়ও চার্জশীটভূক্ত আসামী। বন আইনসহ আরো কয়েকটি মামলার আসামী সে। আবুল কাশেম বিএনপি‘র রাজনীতি করলেও সাম্প্রতিক সময়ে খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলমের সঙ্গে চলাফেরা করতেন। তবে বিএনপি শাসনামলে শহরের শালবন ও আশপাশ এলাকায় তার বিরুদ্ধে ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে। সেসময়ে সরকারি সেতুর পাটাতন তুলে নিয়ে নিজ বাড়ির সামনে লাগিয়ে আলোচিত হন।
উল্লেখ্য, এ ঘটনায় নিহত রাসেলের মা খোদেজা বেগমের করা মামলায় প্রধান আসামী হলেন পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম। এছাড়াও তার ছোট ভাই জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব সম্পাদক সম্পাদক দিদারুল আলমসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অন্তত ১০/১৫ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামী করা হয়। গত শনিবার সন্ধ্যায় শহরের মিলনপুর এলাকায় চিহিৃত দুর্বৃত্তরা ছাত্রলীগ নেতা রাসেলকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহাদত হোসেন টিটু আরো জানান, ছাত্রলীগ নেতা মো: রাসেল হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এ যাবত তিনজনকে আটক করা হলেও বাকিদের ধরতে পুলিশ মাঠে রয়েছে। ওসি আরো জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মো: জাবেদের ১৬৪ ধারা জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাবেদ ও মো: আকাশ গুরুত্বপূর্ন তথ্য দিয়েছে। তবে আবুল কাশেম ও আকাশের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে।
রাসেলের কুলখানি
দূর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত মো: রাসেলের কুলখানি শালবন হরিনাথপাড়া গ্যাফে নিজবাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল দুপুরে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া করা হয়। পরে এলাকার বাসিন্দাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। এতে আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন। আওয়ামীলীগের পক্ষ হতে সব ধরণের সহযোগিতা করা হয়। এতে জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, আওয়ামীলীগ নেতা মংক্যচিং চৌধুরী, পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, পৌর আওয়ামীলীগের নেতা জসিম উদ্দিন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রইস উদ্দিন, নুর হোসেন হোসেন, পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল, পৌরসভার কাউন্সিলর পরিমল দেবনাথ, জেলা যুবলীগের সভাপতি যতন বিকাশ ত্রিপুরা, মেহেদি হাসান হেলাল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি টিকো চাকমা, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল করিম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।