জিয়াউল জিয়া
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে সিজারের সময় চিকিৎসকের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনা ঘটে।
প্রসুতির স্বামী সজিব মিয়া অভিযোগ করে জানান, গতকাল(বুধবার) রাতে আমার স্ত্রীর প্রসবযন্ত্রণা উঠলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাই। ভর্তির পর থেকে নার্স ও হাসপাতালে কর্তব্যরত কোন চিকিৎসক রোগিকে দেখতে আসেননি। সকালে রোগি ব্যাথা বেড়ে গেলে তাকে অপারেশন থিয়েটার (ওটি) রুমে নিয়ে যাওয়া হয়।
তার অভিযোগ, ওটি রুমে নিয়ে প্রায় ৩ ঘন্টা ফেলে রাখা হয়। পরে সিজার করার পর ছেলে শিশু জন্ম নিলেও কিছুক্ষণ পর চিকিৎসক শিশুটি মারা গেছেন বলে জানান। শিশুর জন্মের পর শিশুর বুকে, পায়ে ও অন্ডকোষে আঘাতের চিহ্ন দেখতে
পাওয়া যায়।’ তিনি এটিকে ‘চিকিৎসদের অবহেলা’ বলে অভিযোগ করেছেন।
পরে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ ভুক্তভোগি পরিবারের সাথে দফায় দফায় কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আগেই রোগির অবস্থা ভালো ছিলো না।
প্রসুতির শাশুরি ফিরোজা বেগম অভিযোগ করে জানান, সকালে ছেলে বউ এর অবস্থা ভালো না দেখে দ্রুত ডাক্তারের সাথে কথা বলি। তারা দ্রুত সিজার করার জন্য বলে। সিজার রুমে প্রায় ৩ ঘন্টা ফেলে রাখার পর সিজার হয়। পরে আমার নাতিটার
শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। তিনি আরও অভিযোগ করেন, সরকারি হাসপাতাল এখানে কোন কিছুই পাওয়া যায় না। সব কিছু আমাদের কিনতে হয়েছে।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে গাইনী কানসালট্যান্ট ডাঃ তাহমিনা দেওয়ান বলেন, রাতে রোগি ভর্তি করায় আমরা সকালে রোগিকে সিজার করাই। সিজারের কারনে বাচ্চা আঘাত পেলে সাধারণত মাথায় বা কপালে পেয়ে থাকে। এটি সিজারের কারণে হয়নি। এটি অন্য কারনে হতে পারে। বিষয়টি আমরা আলোচনা করছি, কেন এমন হলো। তিনি আরও বলেন, প্রসুতির আগেই রক্তের স্বল্পতা ছিল, সেটি আগে জানানো হয়েছিল। তাই সিজার করতে সময় লেগেছে।’
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ শওকত আকবর বলেন, যখন নরমাল ডেলিভারি সম্ভব হচ্ছিল না, তখন গাইনী কানসালট্যান্টের পরাপর্শে সিজার করার সিন্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু যে কোন কারনেই হউক না কেন আমরা বাচ্চাটিকে রক্ষা করতে পারি নি। এখানে রোগির রক্ত শুণ্যতার বিষয়টি আছে এবং তাৎক্ষনিক রক্তের ব্যবস্থাও করতে পারিনি।’