
‘রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় চার বছর। বিগত চার বছরে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন করেননি ভিসি। নিয়োগের ক্ষেত্রে একচেটিয়াভাবে তার নিজ গ্রাম খাগড়াছড়ির খবমপুরিয়া ও তার আত্মীয়-স্বজনদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বিগত চার বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কোনো দিবস উদযাপন করা হয়নি। শুধু তাই নয়-এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রকাশনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের পরিশ্রম ছিলো সেটা একটি বারও উল্লেখ করেননি। ক্যাম্পাসে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালন করায় অপরাধে এক ছাত্রকে হল থেকে বহিস্কারের মত কাজও করেছেন। ভিসি ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা দ্বিতীয়বার নিয়োগ পাওয়ার জন্য নানা চল-চাতুরি শুরু করেছেন। আর ভিসি ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমাকে পূনঃনিয়োগ দেয়া হলে রাঙামাটিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি হবে ।’
গত ১০ জানুয়ারি ভিসি ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমাকে অপসারণের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিগত চার বছরে তাঁর অযোগ্য অদক্ষতা ও দুর্নীতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে এসব কথাই বলেছেন রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক, রাঙামাটি সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ও সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা জাহাঙ্গীর আলম মুন্না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর রাঙামাটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষনা দিয়েছিলেন। কিন্তু পাহাড়ের উপজাতীয় সশস্ত্র সংগঠনের বাধার কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর শেখ হাসিনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠারও ঘোষনা দেন। তখনো বিরোধীতা করে উপজাতীয় সশস্ত্র সংগঠনগুলো। কিন্তু সাধারণ লোকজনের চাহিদা আর প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার ফলে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই কার্যক্রম শুরু করে। অথচ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগের ক্ষেত্রে ৭০% উপজাতীয়দেরই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আর নিয়োগের ক্ষেত্রে নিজের খেয়াল খুশিমতই নিয়োগ পত্র তৈরি করেন ভিসি। উপ-রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ দেয়া হয় অঞ্জন কুমার চাকমা ও পিএস পদে নিয়োগ দেয়া হয় নৃপেন চাকমাকে। অঞ্জন কুমার চাকমা সরকারি চাকুরি থেকে বহিস্কৃত একজন কর্মকর্তা। আর একটি সরকারি অফিস থেকে বহিস্কৃত কর্মকর্তা আরেকটি সরকারি অফিসে নিয়োগ দেয়া যায় না। অপরদিকে পিএস টু ভিসির মত প্রথম শ্রেণির পদে ভিসির পছন্দের লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে ¯œাতক পাশ একজন প্রার্থীকে। উক্ত প্রার্থীর দুটিতে তৃতীয় শ্রেণি। অথচ সরকারি-বেসরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে একটির বেশি তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়। আর সেখানে দুটিতে তৃতীয় শ্রেণিপ্রাপ্ত প্রার্থীকে নিয়োগ দেয় ভিসি। অথচ এই পদে একাধিক যোগ্য প্রার্থী ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে ভিসি ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমার সুক্ষœ কারসাজি তুলে ধরা হয়। রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করেছে একটি বেসরকারী স্কুলের ২টি কক্ষ ভাড়া করে তবলছড়িতে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়টি জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে ২০১৪ সাল থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভিসি নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন ২০১৩ সালে। সে হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরুর প্রায় ৪ বছর হতে চললেও, অদৃশ্য কারণে থমকে আছে এর অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এখনো গঠিত হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়টির সর্বোচ্চ পরিচালনা পরিষদ রিজেন্ট বোর্ড এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কমিটিসমূহ। যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসনে বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার আভাস পরিলক্ষিত হতে দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন পত্রিকায় জনবল নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির খবর ছাপানো হয়েছে। এক ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে অন্যান্য বিষয়াদির সাথে জনবল নিয়োগের ব্লু-প্রিন্ট বা নীল নকশার একটি চিত্র তুলে ধরা হয়। রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম জনবল নিয়োগের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয় দৈনিক সমকাল ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকায়। প্রথম, তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণীর বিভিন্ন ক্যাটাগরির ১৪টি পদে ২০ জন লোক নিয়োগের নিমিত্তে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ৮ নভেম্বর ২০১৪ সালে। তন্মধ্যে প্রথম ৭টি প্রথম শ্রেণীর পদ। এই ৭টি প্রথম শ্রেণীর পদের মধ্যে ১টি ৫ম গ্রেডের, ২টি সপ্তম গ্রেডের এবং ৪টি নবম গ্রেডের। অন্যান্য পদগুলোর মধ্যে ৮টি তৃতীয় শ্রেণীর অর্থাৎ ১১তম গ্রেডের ৪টি, ১২তম গ্রেডের ১টি, ১৩তম গ্রেডের ২টি, ১৬তম গ্রেডের ১টি এবং চতুর্থ শ্রেণীর অর্থাৎ ২০তম গ্রেডের ৫টি। আবেদনপত্র গ্রহণের শেষ তারিখ ছিল নভেম্বর ২৩, ২০১৪ এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয় ডিসেম্বরের শেষে। ২০১৫সালের জানুয়ারী মাসের মধ্যে প্রথম শ্রেণীর সকল কর্মকর্তা যোগদান করেন, শুধুমাত্র উপ-রেজিস্ট্রার ও মেডিকেল অফিসার ব্যতীত। এই দু’পদে উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া যায়নি বলে অভিমত কর্তৃপক্ষের। ২০১৫ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর অন্যান্য সকল পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। আপাতঃদৃষ্টিতে মনে হতে পারে সবই ঠিক আছে, কিন্তু একটু গভীরে প্রবেশ করলে দেখা যাবে, পূর্ব-পরিকল্পিত এক সাজানো নাটক রয়েছে এ-নিয়োগ প্রক্রিয়ায়। নিয়োগ বিজ্ঞাপনটি একটু সতর্ক ও সচেতনভাবে পড়লে তা স্পষ্টতঃ ধরা পড়ে। যেমন- প্রথমতঃ প্রথম শ্রেণীর সকল পদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে ন্যূনতম ¯œাতক ও ¯œাতকোত্তর ২য় শ্রেণীর ডিগ্রী। কিন্তু পিএস টু ভিসি পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে শুধুমাত্র ¯œাতক; ২য় শ্রেণীর ¯œাতক পর্যন্ত চাওয়া হয়নি। দ্বিতীয়তঃ তৃতীয় শ্রেণীর সকল পদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে ন্যূনতম ২য় শ্রেণীর ¯œাতক ডিগ্রী। কিন্তু একাউন্টস এ্যাসিস্ট্যান্ট পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে শুধুমাত্র ¯œাতক। তৃতীয়তঃ প্রথম শ্রেণীর ৪টি এন্ট্রি লেভেলের অফিসার পদের জন্য ন্যূনতম ২ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হলেও সেকশন অফিসারের জন্য অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ আছে।
কেন এমন সমন্বয়হীন চাওয়া (ৎবয়ঁরৎসবহঃং) কর্তৃপক্ষের? কারণ কর্তৃপক্ষের নীল নকশাটা এখানেই। বিজ্ঞাপন দেয়ার আগেই প্রার্থীর সমূহ যোগ্যতা জেনে বিজ্ঞাপনের কাঠামো তৈরী করা হয়েছে এবং অনুরূপ প্রার্থীকেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যদিও নিয়োগপ্রাপ্তদের চেয়ে শিক্ষাগত ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থী ছিল। জানা গেছে, নিয়োগ প্রাপ্ত পিএস টু ভিসি নৃপেন চাকমার শিক্ষাগত যোগ্যতা ¯œাতক (পাস) তৃতীয় শ্রেণীপ্রাপ্ত; তিনি এইচএসসিতেও তৃতীয় বিভাগে পাশ করেছেন। যেখানে সরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কোনোভাবেই ১টি তৃতীয় বিভাগকে আমলে নেয়া হয়না, সেখানে ২টি ৩য় বিভাগপ্রাপ্ত ডিগ্রীধারীকে প্রথম শ্রেণীর পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তার চেয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রার্থীদের বাদ দিয়ে ভিসি প্রফেসর ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা তার পূর্ব-পরিচিত ব্যক্তিকে পরিকল্পিতভাবে নিয়োগ প্রদান করেছেন। অর্থ্যাৎ এ পদের নিয়োগে যে বিশেষ-সুবিধা-প্রদান করা হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যুক্তি দাঁড় করানো যেতে পারে যে, প্রার্থী একজন উপজাতি। কিন্তু বিজ্ঞাপনের কোথাও তার উল্লেখ নেই যে, উপজাতি হলে প্রথম শ্রেণীর পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা শিথিল করা হবে। এছাড়া বিশ^বিদ্যালয় আইনেও এমন সুবিধা প্রদানের কোন বিধান নেই। বিশেষ বিবেচনায় শিক্ষাগত যোগ্যতা এক ধাপ কমিয়ে ¯œাতক (পাস) বিবেচনা করা হলেও ২টি ৩য় শ্রেণী বিবেচনায় আনা বিশেষ-সুবিধা-প্রদান ছাড়া কিছুই নয়। কেননা বিজ্ঞাপনের ভাষা ও নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা একই। তাই এ নিয়োগ যে পূর্ব-পরিকল্পিত এক নীল নকশা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রয়োজনে বিষয়টি খতিয়ে দেখা যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়-এরূপ নীল নকশার আভাস ও ধারাবাহিকতা দেখা যায়, ২য় জনবল নিয়োগের বিজ্ঞাপনেও। যা ২৬/০৬/২০১৬ তারিখে বিশ^বিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের একটি দৈনিক পত্রিকায় বড় আকারে ২৩টি বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞাপনটি এসেছে। কিন্তু অনুরূপ আকারে জাতীয় কোনো দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি। তবে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ছোট আকারে (ক্যাপশন আকারে) প্রকাশিত হয়েছে। অর্থ্যাৎ দেশের বৃহৎ অংশের প্রার্থীদের চোখ এড়িয়ে বিশেষ এলাকার প্রার্থীদের আবেদন করার সুযোগ করে দিয়েছেন স্বয়ং ভিসি ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা। ২য় বিজ্ঞাপনের নিয়োগের নীল নকশা এখান থেকেই শুরু। দেখা গেছে, এ ২৩টি পদে জনবল নিয়োগ করতে কর্তৃপক্ষ সময় লাগিয়েছে দীর্ঘ এক বছর। কেন এ দীর্ঘসূত্রিতা ? এটা কি ঝোপ বুঝে কোপ মারার জন্য? এ দীর্ঘ সময়ের মাঝামাঝি সময়ে নিয়োগ পেয়েছেন উপ-রেজিস্ট্রার। বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় যে, এ পদে বয়স ও অভিজ্ঞতা শিথিল করে বিশ^বিদ্যালয়ের উচ্চতম প্রশাসনিক পদ উপ-রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে অঞ্জন কুমার চাকমাকে। বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে তার কোন প্রশাসনিক কর্ম অভিজ্ঞতা নেই। তিনি বিগত প্রায় ১ বছরে নতুন এ বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বরং তার দীর্ঘ এনজিও’র কর্ম-অভিজ্ঞতা থাকায় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন স্বায়ত্তশাসনের কাঠামোতে না দাঁড়িয়ে এনজিও’র কাঠামোয় রূপ নিতে দেখা যাচ্ছে। ভিসি-র অনুমোদন ছাড়াই এক বিভাগের কর্মচারীকে অন্য বিভাগের কাজে নিয়োজিত করছেন। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে বাকী পদগুলোর নিয়োগে বাছাইবোর্ডে উপস্থিত থেকে ভিসিকে নীল নকশা বাস্তবায়নে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিতে সহায়তা করেছেন এই উপ-রেজিস্ট্রার। পরবর্তী পদগুলো নিয়োগে তাঁর মতামতকে প্রাধান্য দিয়েছেন ভিসি প্রদানেন্দু এবং এক তরফাভাবে আত্মীয়করণ ও গোষ্ঠীকরণ করতে সহায়তা করেছেন তিনি। কিন্তু প্রশ্ন উত্থাপিত হলে, বলা হয় তাঁরা কিছুই করেননি, সব করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন(ইউজিসি) এবং সব করা হয়েছে যোগ্যতার ভিত্তিতেই। নতুন বিশ^বিদ্যালয় হিসেবে ইউজিসি উদার দৃষ্টিকোণ থেকে অর্গানোগ্রাম ছাড়াই বিশ^বিদ্যালয়টিকে সকল পর্যায়ে সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছেন। কিন্তু ভিসি ও উপ-রেজিস্ট্রার উভয়ই ইউজিসি-র এই উদারতাকে এক সংর্কীণ ও নীল নকশার পথে পরিচালিত করেছেন। উল্লেখ্য এই উপ-রেজিস্ট্রার অঞ্জন কুমার চাকমা পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রনালয় থেকে বহিস্কার হওয়ার কর্মকর্তা। একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বহিস্কার হওয়া কর্মকর্তা কিভাবে আরেকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাই? এছাড়াও বিগত নিয়োগে সহকারি পরিচালক (পরীক্ষা ) যোগ্য আবেদনকারি থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে প্রাইমারী স্কুলের এক শিক্ষককে। বড়ই হাস্যকর বিষয় বিশ^বিদ্যালয়ের পরীক্ষার কার্যক্রম চালাবে প্রাইমারী শিক্ষক!
বিশ^বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমের দীর্ঘ ২ বছর অতিক্রান্ত হলেও বিশ^বিদ্যালয়ের নেই কোনো রিজেন্ট বোর্ড, একাডেমিক কাউন্সিল ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য কমিটি। এ পর্যন্ত প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এর প্রেক্ষিতে বিশ^বিদ্যালয়ের সকল প্রকার প্রসাশনিক ও একাডেমিক কর্মকান্ডে একচ্ছত্র ক্ষমতা ভোগ করছেন ভিসি ও উপ-রেজিস্ট্রার।
সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়-এসব নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিশ^বিদ্যালয়ের আভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের কোনো অগ্রাধিকার দেয়া হয়নি অথচ সব বিশ^বিদ্যালয়ে বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। যারা পূর্বের অভিজ্ঞতাসহ এ বিশ^বিদ্যালয়ে দুই বছরের অধিক সময় ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছে, তারা অযোগ্য হয়ে গেল! শুধু তাই নয়, এমনও তথ্য পাওয়া গেছে যে, আভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের অনেককে তার প্রার্থীত পদে আবেদন করতে দেয়া হয়নি। কারণ, তাদেরকে অগ্রাধিকার দিলে বা প্রার্থীত পদে আবেদন করতে দিলে, কর্তৃপক্ষের পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে নীল নকশায় থাকা প্রার্থীকে নিয়োগ দিবেন কি করে ?
সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়-রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করতে গিয়ে পিসিপি’র সন্ত্রাসীদের কাছে প্রান দিতে হয়েছে মনির নামে এক নিরীহ যুবককে। আহত হয়েছে এর পক্ষে আন্দোলনকারী অনেক বাঙালী। অবশেষে পাহাড়ের সাধারন মানুষের আশা আকাংখার প্রতিফলন ঘটেছে। এই দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, একই সাথে শুরু হওয়া দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ একটি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়ালেও অপর প্রতিষ্ঠান রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে এখনো খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। একটি স্কুলের ভাড়া বাসায় চলছে এর কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে প্রচুর পরিমান টাকা থাকলেও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার দুই বছর অতিক্রান্ত হলেও এই প্রতিষ্ঠানের সিইএসসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য এখনো কোনো ল্যাবের ব্যবস্থা করা হয়নি। ভাড়া করা বিল্ডিংয়ে চলছে কার্যক্রম। স্কুলের হোস্টেল ভাড়া নিয়ে সেখানে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে শিক্ষার্থীদের। নিজস্ব জমি বুঝে পেলেও এর কাজ শুরু করার কোনো প্রকার আভাস পাওয়া যাচ্ছেনা।
গত ৪নভেম্বর বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ আবদুল মান্নান বিশ^বিদ্যারলের ভুমিস্বত্ত বুঝে নেয়ার জন্য রাঙামাটি সফর করেছিলেন। তাঁর তিনদিনের সফরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সাথে চেয়ারম্যানের সাক্ষাতের কোনো সিডিউল রাখেননি থলের বিড়াল বের হয়ে যাওয়ার ভয়ে। শুধু তাই নয়, চেয়ারম্যানের কোনো প্রোগ্রামেও সাংবাদিকদের তেমন একটা ডাকাও হয়নি। এসব কাজ বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা তার নীল নকশা অনুযায়ীই করছে।
সবে তো শুরু!
পাহাড়ের এই প্রতিষ্টান গুলোর কারণে রীতিমতো ঝামেলা পোহাবে পর্বতবাসী।
ভবিষ্যতে দেখা যাবে বিভিন্ন বিষয় আর দাবিদাওয়া নিয়ে ঐসকল প্রতিষ্টানের ছাত্র আন্দোলন, মিশিল, সভা সমাবেশ, রাজপথে আন্দোলন সহ হরতালও হতে পারে।
পক্ষে বিপক্ষে কতই না ঘটবে!
এই সব প্রতিষ্টান দুটি ভবিষ্যতে এলাকার বা জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে…. রাজনীতির মোড় ঘুরে যাবে এবং সাধারণ পার্বত্যবাসী কে ভোগাবে।
সময়েই বলে দিবে এই প্রতিষ্টানগুলো পার্বত্যবাসীর জন্য অভিশাপ না আশির্বাদ! তবে সামাজিক ও রাজনীতিক ভাবে বিরুপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনাই বেশী বলে আমার মনে হয়….
ওনাকে বহিষ্কার করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রতি দাবি জানাই