
পাহাড়ের আঞ্চলিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(এমএন লারমা গ্রুপ)’র কেন্দ্রীয় সভাপতি তাতিন্দ্র লাল চাকমা ওরফে মেজর পেলে(৭২) মারা গেছেন।
বৃহষ্পতিবার(১৩ আগষ্ট) সকাল সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে নেতাকর্মীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে, এক মেয়ে এবং স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। এর আগে গত ৯জুন বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান দলটির অপর শীর্ষনেতা সুধাসিন্ধু খীসা।
গত ৩ আগষ্ট অসুস্থ্য হলে তাকে প্রথমে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং অবস্থার অবনতি হলে তাকে গত ৮ আগষ্ট চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
সাবেক এ গেরিলা নেতা অবিভক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সশস্ত্র আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে অন্যতম তিনি। তাতিন্দ্র লাল চাকমা ওরফে মেজর পেলে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের আগ পর্যন্ত সন্তু লালমা’র নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র শাখা ‘শান্তিবাহিনীর’ সহকারি ফিল্ড কমান্ডারের দায়িত্ব ছাড়াও চুক্তি’র পরে প্রকাশ্য রাজনীতিতে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর জনসংহতি সমিতি মূলধারার রাজনীতিতে আবির্ভূত হলেও পরবর্তী সময়ে দলে মতবিরোধ দেখা দেয়। এর জেরে সন্তু লারমার নেতৃত্ব থেকে বেরিয়ে ২০০৯ সালে জনসংহতি সমিতির আরেকটি অংশ সৃষ্টি হয়। সেটির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন। সর্বশেষ গত ১৮ ফেব্রুয়ারী জনসংহতি সমিতির জাতীয় সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এদিকে জনসংহতি সমিতি (এম এন লারমা)-এর একাধিক সূত্রের সাথে কথা বলে জানা যায়, কেন্দ্রীয় সভাপতি তাতিন্দ্র লাল চাকমার মৃত্যুর ঘটনায় সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপাতত সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুভাষ কান্তি চাকমা ওরফে পরিচয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
পার্টিও কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা বলেন, পার্টির প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিকালে পারিবারিকভাবে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় দাহক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।