খাগড়াছড়িতে দূর্গা পূজা উপলক্ষ্যে মন্দির গুলোতে চলছে শেষ মূহুর্তের কাজ। মৃৎ শিল্পীরা এখন ব্যস্ত মাটির কাজ শেষে; প্রতিমায় রং’র আঁচর দেয়াতে। মন্দিরগুলোতে প্রায় শেষ সাজসজ্জা সহ প্যান্ডেল তৈরির কাজ।
হাতে গোনা আর কটা দিন। তারপরই মন্দিরে বেজে উঠবে ডাক আর কাসা। উলুদ্ধনিতে মুখরিত হবে মন্দির প্রাঙ্গন গুলো। কারণ আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। তবে পাহাড়ের বসবাসরত ত্রিপুরা সম্প্রদায় সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী হওয়ায় তারাও সমানভাবে এই উৎসব পালন করে।
সনাতন ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলেও পাহাড়ে এই উৎসবকে ঘিরে পাহাড়ী বাঙ্গালীদের মধ্যে সম্প্রীতির উৎসবে পরিনত হয়। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পূজা মন্ডপগুলোতে অন্যান্য ধর্মীবলম্বীদের উপস্থিতি চোখে পরার মত। সকল সম্প্রদায়ের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠবে পূজা মন্ডপগুলো।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাগড়াছড়ির বৃহৎ পূজা মান্ডপ শ্রী শ্রী লক্ষী নারায়ণ মন্দিরে মাঠ জুড়ে পেন্ডেলের কাজ চলছে। প্রতিমা তৈরির কাজ শেষে চলচে মঞ্চ তৈরির কাজ। এছাড়া জেলা সদরের শান্তিনগর, আনন্দনগর, জগন্নাথ মন্দিরসহ জেলা-উপজেলার পূজা মান্ডপে অন্যান্য ব্যস্ত সময় পার করছে মৃৎ শিল্পীসহ এক ঝাঁক কর্মী।
খাগড়াছড়ির লক্ষী নারায়ন মন্দির দূর্গা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিক শংকর দেব জানান, এবার নতুন আঙ্গিতে পূজা মান্ডপ সাজানো হচ্ছে। বরফ ঘরের মাঝখানে দেবী দূর্গার প্রতিকী রুপ তুলে ধরা হচ্ছে। পূজার নতুনত্ব দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষন করবে বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে দূর্গা পূজা আসার অনেক আগ থেকে বিপণী বিতান গুলোতে ভীড় চোখে পরার মত। পূজায় নতুন সবাই। শিশূ থেকে বৃদ্ধা সবাই মেতেছে কাপড় চোপড় কেনার তালে। পোষাকের সাথে মানান সই কসমেটিক কিনতে ভীড় লেগেই আছে প্রসাধনীর দোকান গুলোতে।
খাগড়াছড়ি পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জানান তরুন কুমার ভট্টাচার্যী জানান, পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে এবার পূজা মন্ডপের সংখ্যা ৪৭টি। তারমধ্যে সদরে ১৪টি, মাটিরাঙ্গায় ৭টি, মহালছড়িতে ২টি, মানিকছড়িতে ২টি, লক্ষীছড়িতে ১টি, দীঘিনালায় ৯টি, পানছড়িতে ৮টি এবং রামগড় উপজেলায় ২টি পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে জেলা সদরে ১টি, দীঘিনালায় ২টি ঘট পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতি বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ ভাবে পূজা উদযাপনের জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে পুলিশ প্রশাসন। সার্বিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে দফায় দফায় বেঠক করছেন পুলিশ ও জেলা প্রশাসন।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আলী আহম্মেদ খান জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পূজা মান্ডপগুলোকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পূজা মান্ডপগুলো দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান দুই ধরনের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থাকবে বলেও জানান তিনি।