খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের শিক্ষক নিয়োগের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ তুলে আন্দোলন করা সম্মিলিত ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে বুধবার সকালে একটি বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। বিবৃতিটি হুবহু নীচে তুলে দেয়া হলো-
‘সম্মিলিত ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে সংগ্রামী শুভেচ্ছা জানাই। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের বহুল সমালোচিত বিতর্কিত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার কয়েকটি ধাপ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। জনগণের প্রবল আপত্তি ও আন্দোলনকে অগ্রাহ্য করে গত ১৮ ও ২২ সেপ্টেম্বর মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছে জেলা পরিষদ।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিয়ম বহির্ভূত কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করেছিল। নির্দিষ্ট কোটা বরাদ্দ থাকার পর তারা অসংখ্য প্রার্থীর কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বরাদ্দকৃত কোটা পূরণ করতে না পারায় জেলা পরিষদের সদস্যসহ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িতদের মধ্যে কানাঘুষা ও মন মালিন্যের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়।
এদিকে যে সকল প্রার্থীদের চাকরি জুটেনি তাদেরকে প্রদেয় ঘুষের টাকা ফেরত পেতে জেলা পরিষদ কার্যালয়ে প্রতিদিন লাইন ধরতে দেখা যায়। অনন্যোপায় হয়ে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ক্ষমতাসীন দলের কাছে দারস্থ হচ্ছেন। দেশীয় আইন অনুযায়ী ঘুষ দেয়া নেয়া একটি সামাজিক অপরাধ বিধায় তারা আইনের আশ্রয় নিতেও ভয় পাচ্ছেন। টাকা ফেরত না পেয়ে অনেকে হা হুতাশ করছেন। জমিজমা বিক্রি করে টাকা দেওয়ার পরও চাকরি না হওয়ায় স্বর্বশান্ত হয়েছে উল্লেখ করে ভূক্তভোগী কয়েকজন প্রার্থী সম্মিলিত ছাত্রসমাজকে জানিয়েছে।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, জেলা পরিষদ কর্তৃক ওপেন সিক্রেট নিয়োগ মেকানিজম সৃষ্টি করে গরীব ও মেহনতি মানুষকে ঘুষ দিতে বাধ্য করছে। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের আন্তরিকতা এবং নিরপেক্ষ ভূমিকা না থাকার কারণে ফ্যাক্স নির্বাচন পদ্ধতি জারি রাখায় প্রকাশ্যে সৃষ্টি হয়েছে লুটেরা বাহিনী। কতিপয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ক্ষমতাশালীদের উপর ভর করেই জেলা পরিষদ এহেন অপকর্ম করার দৃষ্টতা দেখিয়েছে। অতীতের রেকর্ড ভাঙা কুকর্ম, সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়ম সংগঠিত হওয়ার পরও তা অস্বীকার করে নির্লজ্জভাবে তথাকথিত স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার কথা বলছে জেলা পরিষদ।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, তাড়াহুড়ো করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে সরকারি ছুটি থাকার পরও ২২ সেপ্টেম্বর ২য় দফা মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। বেশ কয়েকজন প্রার্থীর চাকরিতে যোগদানের বিষয়ে অভিযোগ উঠে এসেছে। পার্বত্য মন্ত্রণালয় থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন হওয়ায় সম্মিলিত ছাত্রসমাজ আশাবাদ ব্যক্ত করছে। সকল দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে জোট সোচ্চার থাকবে।
অবিলম্বে ঘুষ বাণিজ্য-অনিয়ম, বিতর্কিত শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ না করলে সম্মিলিত ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।
বার্তা প্রেরক,
(সুদর্শী চাকমা)
প্রতিনিধি
সম্মিলিত ছাত্রসমাজ