
খাগড়াছড়িতে বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতিকালে ওই বাড়ির বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক নারী ধর্ষনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা সদরের বলপাইয়া আদাম এলাকায় বুধবার দিবাগত গভীর রাত আনুমানিক দু’টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, এ ব্যাপারে থানায় এজাহার দায়ের করেছেন বাড়ির গৃহিনী পুষ্প রানী চাকমা। কারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের চিহিৃত করার কাজও শুরু হয়েছে। এদিকে ধর্ষিতা নারীকে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মো: আব্দুল আজিজ জানিয়েছেন, ঘটনাটিকে খুবই ন্যাক্কারজনক। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দায়ীদের গ্রেফতার করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মূলত: পরিস্থিতি ঘোলাটে করার জন্য কোন একটি চক্র এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। যারাই এমনটা করে থাকুক, ছাড় দেয়া হবেনা।
ডাকাতি হওয়া বাড়ির মালিক অসুস্থ্য বিন্দু লাল চাকমার অভিযোগ, সবাই যখন ঘুমে আচ্ছন্ন; তখন দরজা ভেঙে ডাকাত সদস্যরা বাড়িতে প্রবেশ করে সবার হাত পা বেঁধে ফেলে এবং বাড়িতে লুটপাট চালায়। হামলাকারীদের অধিকাংশের মুখে মাস্কপড়া ছিল। বাকীদের মুখ ঢাকা ছিলনা। তাদের দু‘জন ছিলো লুঙি পড়া অবস্থায়।
থানায় এজহার দিতে যাওয়া বিন্দু লাল চাকমার স্ত্রী পুস্প রানী চাকমা জানান, দূর্বত্তরা সংখ্যায় ৮/৯ জন ছিলো। প্রায় যুবক বয়সী ডাকাত দলের সদস্যরা বাড়ির একটি কক্ষে তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারী (২৬) কে হাত, পা বেঁধে ও মুখ ওড়না দিয়ে পেচিয়ে রেখে উপর্যপরি ধর্ষণ করেছে। তিনি বলেন, ‘তারা আমার কানের দুল, আংটিসহ অন্তত ৩ ভরি স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন সেট নিয়ে গেছে। গোটা বাড়ির আলমিরা, ওয়ারড্রপসহ সব কিছু তছনছ করে রাত ২টা থেতে ভোর ৪টা পর্যন্ত দূর্বত্তরা বাড়িতে লুটতরাজ চালিয়েছে। গৃহকর্তী বিন্দু লাল চাকমা শারিরীকভাবে খুবই অসুস্থ্য হওয়ায় দূর্বত্তদের কোন ধরণের প্রতিরোধ করা যায়নি। পরে ঘরের বাইরে থেকে দরজার হুক মেরে ডাকাত সদস্যরা পালিয়ে যায়।’ বৃহস্পতিবার সকালে চেচামেচির শব্দ শুনে প্রতিবেশিরা এসে তাদের উদ্ধার করেন।
এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম আবছার জানিয়েছেন, এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অপরাধী যারাই হোক খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে নারীবাদী সংগঠন উইমেন্স রিসোর্স নেটওয়ার্ক এর সমন্বয়কারী শেফালিকা ত্রিপুরা একের পর ধর্ষন ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি প্রতিটি ধর্ষন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন এবং নির্যাতিত নারীদের নিরাপত্তা ও পুনবার্সনের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান।