শ্যামল রুদ্র, রামগড় ॥
খাগড়াছড়িতে অবাধে পাহাড়-টিলা কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। খাগড়াছড়ির সবকটি উপজেলার চিত্র অভিন্ন। গুইমারার বিভিন্ন এলাকায় আইন অমান্য করে পাহাড় কাটার অভিযোগ উঠেছে। হাফছড়ি, জালিয়াপাড়া, হাতিমুড়া, সিন্দুকছড়ি, বাইল্যাছড়ি, কালাপানি, দেওয়ানপাড়া প্রভৃতি এলাকায় এবং রামগড়ের নাকাপা, পাতাছড়া, খাগড়াবিল, বলিটিলা, লালছড়ি, কালাডেবা, বৈদ্যপাড়াসহ এলাকার বিভিন্ন স্থানে স্কেভেটর দিয়ে পাহাড় ও ফসলী জমির মাটি কাটার মহোৎসব চলছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, লালছড়িতে পাহাড় কাটছে নুরনবী ও লতিফ ড্রাইভার, হাফছড়িতে পাহাড় কাটছেন রফিকুল ইসলাম, শুক্কুর আলীসহ একটি অসাধু চক্র। তাদের ব্যবসা চালাতে যাতে বাধা বিপত্তি না আসে এজন্য স্থানীয় মাস্তানদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করা হয়। গত ৩ এপ্রিল মাটিরাঙ্গার গোমতি ইউনিয়নের বান্দর ছড়ায় অবৈধভাবে মাটিকাটায় সহকারী কমিশনার(ভূমি) আফরোজা আফরিন শাপলা একব্যক্তিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন।
সিন্দুকছড়ির বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফসলী জমি ও পাহাড় কেটে ট্রাকভর্তি মাটি ব্রিকফিল্ডে ব্যবহার করছে এবং নিচু জায়গা ভরাট করছে। এতে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত পরিবারগুলোর জীবন মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
পাহাড় কাটায় ব্যবহার হচ্ছে ১০ থেকে ১২টি স্কেভেটর। ৫টি ব্রিকফিল্ডের অধিনে রয়েছে ৮-৯টি। স্কেভেটর ও ট্রাকটর দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছে অসাধুচক্রগুলো। মো. রফিকুল, শুক্কুর আলী, রাজন পাল ও আলী নুর ও এদের মদদপুষ্টদের সহযোগিতায় চলছে পাহাড়-টিলা ধংস।
জানতে চাইলে সিন্দুকছড়ির চেয়ারম্যান রেদাক মারমা বলেন, মাটি ভরাট করে জমিগুলোকে চাষাবাদের উপযোগী করা হচ্ছে। কিছু মাটি অবশ্য ব্রিকফিল্ডের কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
গুইমারার বিভিন্ন স্থানে নানা অজুহাতে নির্বিচারে পাহাড় কাটা হচ্ছে। সচেতনমহল জানান, এসকল অবৈধ কর্মকান্ডের কারণে, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধ না হলে বিপর্যয়ের মুখে পরবে সাধারণ মানুষ।
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত বলেন, খবর পেলেই দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রশাসনের অগোচরে অনেক সময় দুষ্টচক্রগুলো এধরণের কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়।