বুধবার বাজার দিনে পার্বত্য শহর রাঙামাটির তবলছড়ি বাজারে বর্জ্য পরিষ্কার নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অটোরিকশা চালক কর্তৃক মারধরের প্রতিবাদে দেড়ঘন্টা সড়ক অবরোধ,তবলছড়ির প্রধান সড়কের উপর আবর্জনা স্তুপ করে রাখা,শুক্রবার সকালে প্রতিবাদ সমাবেশ,শুক্রবার সারাদিন শহরে আবর্জনা পরিষ্কার বন্ধ রাখার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় পৌর মেয়রের কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সমঝোতা সভায় অবসান হয় সংকটের। পারস্পরিক কোলাকুলি,ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে দু:খ প্রকাশ এবং হাসিখুশি ছবি তোলার মধ্য দিয়েই আপাতত শেষ হয় শহরবাসির নাভিশ্বাস হয়ে উঠা সংকটের।
সন্ধ্যায় পৌর মেয়রের কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন পৌর কর্মচারি সংসদ ও পৌর সেবক সমিতির নেতারা। ছিলেন অভিযুক্ত অটোরিকশা চালক সমিতির নেতারা। সাথে পৌর মেয়র ও পৌর পরিষদের অন্যান্য কাউন্সিলর ও পৌর কর্মকর্তারা।
সভায় উভয়পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ,অনুযোগ তোলেন এবং পরে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের ব্যাপারে একমত পোষন করেন। অন্যতম অভিযুক্ত অটোরিক্সা চালক সমিতির সভাপতি ও পৌরসভার দায়ের করা মামলার আসামী অলি আহমেদ এসময় পৌরসভার প্রকৌশলী বিরল বড়–য়ার কাছে এবং অভিযুক্ত চালক জাহাঙ্গীর মার খাওয়া পরিচ্ছন্নতা কর্মী চিত্তরঞ্জন চাকমা ও অন্যান্যদের কাছে ক্ষমা চান। এবং অটোরিকশা চালক সমিতির নেতারা আশ্বস্ত করেন, ভবিষ্যতে এই ধরণের ঘটনা আর ঘটবে না। ক্ষমা চাওয়ার পর উভয় পক্ষ পৌরমেয়রসহ ফটোসেশন করেন এবং সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও আপলোড করেন কয়েকজন।
পরে সভাশেষে পৌর কর্মচারি সংসদের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘ ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ স্বীকৃতি লাভ করায় শনিবার সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে আনন্দ শোভাযাত্রা কর্মসূচির প্রতি সম্মান রেখে ও পৌরবাসীর দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মেয়র মহোদয়ের উদ্যোগে শুক্রবার বিকেলে একটি সমঝোতা সভা মেয়র কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সমঝোতা সভায় সিএনজি অটোরিক্সা চালক সমিতির নেতৃবৃন্দ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্য অনুতপ্ত হয়ে ভুল স্বীকার করে নেওয়ার প্রেক্ষিতে রাঙামাটি পৌর কর্মচারী সংসদ ও রাঙামাটি পৌর সেবক কল্যাণ সমিতির ডাকা অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জ্য অপসারণ বন্ধের কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হল।’
রাঙামাটি পৌর কর্মচারী সংসদের সভাপতি এসএম বশির আহমেদ জানান, বিকেলে মেয়র সাহেবের রুমে অটোরিকশা সমিতির নেতৃবৃন্দ এসে বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চাইলে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকান্ড থেকে নিজেদের বিরত রাখার আশ্বাস দিলে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়েছে। মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা মীমাংসার জন্য রাজি হই। পরবর্তীতে মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলে তিনি জানান।
রাঙামাটি অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি অলি আহম্মেদ বলেন, একটা বিষয় নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। এখন বিষয়টি আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছি। আশা করছি ভবিষ্যতে একই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবেনা।’
রাঙামাটি পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অভিভাবক হিসেবে পরিচিত সহকারি কনজারভেন্সি পরিদর্শক বিপ্লব তালুকদার বলেন, আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা খুবই গরীব,তারা সামান্য বেতনে যে অমানসিক পরিশ্রম করে সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এরা দিনরাত পরিশ্রম করে রাঙামাটি শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য। এদের ভুল ক্রুটি হতে পারে,এরাওতো মানুষ। কিন্তু তাই বলে এদের গাঁয়ে হাত দেয়াটা অমানবিকতা। এরা যদি কোন অন্যায় করে থাকে,তবে আমাদের জানালে আমরা মেয়র মহোদয়কে অবহিত করব,তিনি ব্যবস্থা নিবেন। কিন্তু এদের গাঁয়ে হাত তুললে আমাদের কষ্ট হয়।’
3 Comments
সিএনজি চালকদের শাস্তি না হলে রাংগামাটি মানুষ শান্তি পাবে না, ড্রাইভারদের উপর রাংগামাটিবাসি ক্ষিপ্ত।
রাংগামাটি শহরে টাউন সার্ভিস মিনিবাস চালু করার দাবি জানাচ্ছি ।
Nice.