কাপ্তাই বৃক্ষমেলায় চারা বিক্রি কম হওয়ায় হতাশ নার্সারি মালিকরা

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ নার্সারি, অনেক লাভের আশায় কয়েক হাজারের বিভিন্ন প্রজাতির চারা নিয়ে আসে কাপ্তাই বৃক্ষমেলায়। কিন্ত আশনারুপ বিক্রি না হওয়ায় হতাশ প্রকাশ করলেন নার্সরি মালিক আব্দুল কাদের এই প্রতিবেদকেরর কাছে।তিনি জানান লাখের উপরেও বিক্রির টার্গেট থাকলেও বিক্রি হয়েছে মাত্র ৬৫ হাজার।
একইভাবে এই প্রতিবেদকের কাছে হতাশা প্রকাশ করলেন রাংগুনিয়া আলম শাহ পাড়ার আলম নার্সারির মালিক মো আলম,রাইখালি ভাই ভাই হর্টিকালচার নার্সারির মালিক মো ইদ্রিচ আলী, আনোয়ারা কাফকো কসমো নার্সারির মালিক আবুল কালাম আজাদ সহ মেলার প্রায় স্টলের মালিকরা।
সকলেই জানান টার্গেট এর চেয়ে বিক্রি হয়েছে অর্ধেক। মালিকরা জানান প্রচার প্রচারনা কম হওয়ায় এবার মেলায় ক্রেতার সংখ্যা ছিলো গত বছরের চেয়ে কম। মেলায় আগত কাপ্তাই শীলছড়ির শফিউল আলম খোকন জানান আরো একটু প্রচার প্রচারনা হলে মেলায় ক্রেতার সংখ্যা বাড়তে পারতো। তবে তিনি মেলার সামগ্রিক পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
কাপ্তাই বৃক্ষমেলার প্রথম ২ দিনে লোকসমাগম কম হলেও বুধবার মেলার শেষ দিনে প্রচুর লোকসমাগম দেখা যায়। কেউ এসেছে চারা কিনতে,কেউ পরিবার নিয়ে ঘুরতে আবার কেউবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করতে। মেলায় আসা শিলছড়ির ছোট বন্ধু অম্রাচিং মার্মা তার বাবা রতন মার্মার সাথে এসেছেন গোলাপ ফুলের চারা কিনতে, কিন্ত না পেয়ে একটু হতাশ প্রকাশ করলেন তার বাবা রতন মার্মা।
কাপ্তাই প্রজেক্ট এলাকার গৃহবধু খোদেজাও পরিবার নিয়ে এসেছেন শেষ দিনে মেলায় চারা কিনতে।তারা মেলার সামগ্রিক পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি লেবু, জাম্বুরার চারা কিনলেও মরিচ গাছের চারা না পেয়ে একটু ব্যথিত হন।মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো সামসুল আলম চৌধুরী এবং উপ সহকারী উদ্ভিদ উদ্যান কর্মকর্তা মংসুপ্রু মার্মার সাথে,তারা জানান সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দূর্যোগে এই অঞ্চলের মানু্ষের জান মালের ব্যপক ক্ষতি হয়,ফলে লোকসমাগম এবং বিক্রি একটু কম হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি রাংগামাটি জেলা পরিষদ,উন্নয়ন বোর্ড সহ বিভিন্ন এনজিও সংস্হা সমুহ বিনামূল্যে কৃ্ষকদের মাঝে চারা বিতরন করায় সেটাও মেলায় প্রভাব ফেলেছে।
এদিকে বৃক্ষমেলার শেষ দিনে আজ কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে স্টল মালিকদের মধ্যে পুরস্কার বিতরন করা হয়। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন সমাপনি দিনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্হিত থেকে শ্রেষ্ট স্টল সমুহের মধ্যে পুরস্কার বিতরন করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিকুল আলমের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠানে ব্ক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত বিকাশ তংচংগ্যা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরনাহার বেগম এবং কৃষি কর্মকর্তা সামসুল আলম চৌধুরী।
শেষ দিনে জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের সহোযোগিতায় উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর শিল্পীরা বৃক্ষমেলার সমাপনি দিনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে পরিবেশন করে মনোমুগ্ধকর সংগীতানুষ্ঠান। বেতার শিল্পী রফিক আশেকীর কন্ঠে বৃক্ষ বিষয়ক গান,অন্ধ শিল্পী কালুর কন্ঠে হারানো দিনের গান সহ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরনাহার বেগম,উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক এর আর লিমন,বেতার শিল্পী মো রফিক,রওশন তানি,জ্যাকলিন তংচংগ্যা, বসু মল্লিক এবং উপ সহকারী উদ্ভিদ উদ্যান কর্মকর্তা মংসুপ্রু মার্মার কন্ঠে বিভিন্ন ধরনের সংগীত পরিবেশন মেলায় আগত দশর্নাথীরা উপভোগ করে তুমুল করতালিতে। নুর মোহাম্মদ বাবুর সঞ্চালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যন্ত্র সংগীতে সহোযোগিতা করেন ফনীন্দ্র লাল ত্রিপুরা,ঝুলন দত্ত,রোকন,অভিজিত, পুলক এবং অর্নব।