আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী ডাংগুলি, নৌকা বাইচ, সাপলুডু, বউছি, গোল্লাছুট, লুকোচুরি, হা-ডু-ডু, দাঁড়িয়াবান্ধা, কানামাছি, ঘুড়ি উড়া, পুতুল নাচ, কাবাডি, লাঠিখেলা, সাপখেলা, মার্বেল খেলা, বলীখেলা, মোরগের লড়াই, ষাড়েঁর লড়াই ইত্যাদি খেলা এখন চোখে পড়ে না। কালের গর্বে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ধারক বাহক সেই গ্রামীণ খেলাগুলো। আধুনিক সভ্যতার যাঁতাকলে পিষ্ঠ হয়ে এখনকার ছেলেমেয়েরা মত্ত আছেন ভিন্ন দেশীয় সংস্কৃতি এবং খেলাধূলায়। যার ফলে একের প্রতি অন্যের সেই ভালোবাসা, মমত্ববোধ সেটা আমরা আগের মতো দেখতে পাই না।
সেক্ষেত্রে রূপসী কাপ্তাই এর এই নান্দনিক ব্যতিক্রমি আয়োজন আমাদেরকে ক্ষণিক সময় হলেও সেই চিরচেনা গ্রামীণ জনপদে ফিরে নিয়ে যায়। শনিবার কাপ্তাই থেকে প্রকাশিত সাহিত্য, বিনোদন, সংস্কৃতি এবং ভ্রমণ বিষয়ক সাময়িকী রূপসী কাপ্তাই এর আয়োজনে কাপ্তাই চন্দ্রঘোনা কেপিএম স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী বউছি খেলা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরা একথা বলেন।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিকুল আলম ঐতিহ্যবাহী এই খেলার উদ্বোধন করেন।
রূপসী কাপ্তাইয়ের সম্পাদক কাজী মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন কেপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড: এম এম এ কাদের। কেপিএম এর মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) জাহাঙ্গীর হোসেন খানের সভাপতিত্বে খেলায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেপিএম স্বুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: ওবায়েদ উল্যাহ, বড়ইছড়ি কাদেরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়সীম বড়ুয়া, কেপিএম সিবিএ সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, কার্যকরি সভাপতি সাইদুল হক, যুগ্ম সম্পাদক আনিছুর রহমান এবং সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ঝুলন দত্ত।
খেলায় কেপিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী পূর্ণিমা আক্তার লিমার নেতৃত্বে ১১ ছাত্রী এবং কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিবি মরিয়ম আঁখির নেতৃত্বে ১১ ছাত্রী অংশ নেয়। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই বউছি খেলায় কেপিএম উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৩-৩৮ পয়েন্টে কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয়কে পরাজিত করে। বউছি খেলা পরিচালনা করেন কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মাহাবুবুল হাসান বাবু এবং সহকারী ছিলেন সালাউদ্দিন বাবু, আনিছুর রহমান, জয়নাল আবেদীন ও ঝুলন দত্ত। হারিয়ে যাওয়া এই বউছি খেলা উপভোগ করার জন্য শত শত ছাত্র ছাত্রী উপস্থিত ছিলেন।