রাঙামাটির জল পাহাড়ের মেয়ে হিমাদ্রী খীসা। জনপ্রশাসনের মেধাবী এই মেয়ে ভৈরব উপজেলায় এসিল্যান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেখানে করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। আইসোলেশন থেকে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন হ্রদ পাহাড়ের শহর রাঙামাটির এই মেয়ে। সেই খবরটিও দৃঢ়তার সাথে নিজের ফেসবুক ওয়ালে জানিয়েছেন। জানিয়েছেন কি করে জয় করলেন ভয়াবহ এই ভাইরাস। হিমাদ্রী’র সেই অভিজ্ঞতা শুনুন তার নিজের বয়ানে-
করোনার সাথে ১৮ দিন!!!
দুইটা শব্দের মধ্যে যে এত দূরত্ব হতে পারে তা আগে কখনো ভাবতেই পারিনি।এই দুইটা শব্দ মুহুর্তের মধ্যে আপনার শরীরে ও মনে যে পরিবর্তন নিয়ে আসবে তা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।
এই শব্দ দুটি- নেগেটিভ ও পজিটিভ।
দুইজন করোনা পজিটিভ এস আইয়ের সাথে ডিউটি পালন ও একসপ্তাহ যাবত সর্দি লেগে থাকায় টেস্ট করায়।গত ১৮ই এপ্রিল রাতে জানতে পারি আমার করোনা পজিটিভ।প্রথমেই আমি যা করেছি তা হল মনোবলকে শক্ত রেখেছি।নিজেকে প্রস্তুত করে নিয়েছি আগামী ১৫-২০ দিন কি করব,কি খাব এবং কিভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরব ইত্যাদি বিষয়ে।সেদিন রাতেই ঘুমানোর আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ওষুধ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লিস্ট করে রাখলাম।
প্রথম দিন সকালেই পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ,ভিটামিন-সি
শুরু হল বেঁচে থাকার জন্য অন্যরকম যুদ্ধ।
দ্বিতীয় দিন সকালে বাড়ি থেকে ফোন দিল কে বা কারা নাকি বলেছে আমি মারা গেছি।এক সিনিয়র স্যারের পরামর্শে ফোন ধরা(শুধুমাত্র পরিবার,ডাক্তার ও সিনিয়র স্যারদের ফোন ব্যতীত),ফেসবুক,
এবার আসি এসময়গুলো কিভাবে কাটিয়েছি।
মনটাকে ফ্রেশ রাখার জন্য মজার মুভি,মজার মজার সব ভিডিও দেখে, বাগানের গাছগুলো পরিচর্যা করে সময় কাটিয়েছি।এরমধ্য
অবশেষে ৩০তারিখের প্রথম টেস্টের রেজাল্ট নেগেটিভ আসল।আর আজ দ্বিতীয় টেস্টের রেজাল্টও নেগেটিভ আসল।সবার দোয়া,আশীর্বাদ ও আন্তরিক সহযোগিতাই আজ আমাকে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে।
মনে রাখবেন।এই অসুখের এখনো পর্যন্ত কোন ওষুধ আবিষ্কার হয়নি।তাই নিজের মনকে শক্ত রেখে স্বাস্থ্যবিধিগু
আসুন সবাই ঘরে থাকি।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি।
করোনাকে প্রতিরোধ করি।
হিমাদ্রী খীসার এই স্ট্যাটাসের নীচে আনোয়ার কবির সোহাগ নামের একজন লিখেছেন-‘অভিনন্দন! একজন দুঃসাহসী যোদ্ধার যুদ্ধ জয় করে বিজয়ীর বেশে ফিরে আসার এই অদম্য গল্প নিঃসন্দেহে আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাবে।’
স্ট্যাটাসটি দেয়ার প্রথম ১৪ ঘন্টায় প্রায় ৩৭০০ মানুষ তাতে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন,মন্তব্য করেছেন ৪৭৮ জন,শেয়ার করেছেন ৩৭৯ জন।