করোনা’র ভয়ে ফাঁকা রাঙামাটি হাসপাতাল !

মানুষ অসুস্থ হলে প্রথমেই যায় ডাক্তারের কাছে আর রোগ মুক্তির জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ভরসার জায়গা হাসপাতাল। কিন্তু বর্তমানে রঙামাটি সদর হাসপাতালে গিয়ে সেখানকার বেড গুলো দেখলেই যে কেউ ভাবতেই পারে, রাঙামাটির মানুষজন খুব একটা অসুস্থ্ হচ্ছে না ! কিংবা অজানা কারণে রোগহীন হয়ে গেছে !
যে হাসপাতালে সব সময় আগত সব রোগীদের বেডে জায়গা হতো না, ফ্লোরে শুয়ে থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে হতো, সেই হাসপাতালের এখনকার চিত্র পুরোটাই ভিন্ন। প্রায় সব বেড’ই ফাঁকা , পুরুষ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় মাত্র তিনজন রোগী আছে। মহিলা ওয়র্ডের চিত্রও একই।
অন্য সময় ডাক্তার- নার্সরা রোগী সেবা দিতে হিমশিম খেত সেখানে এখন তারা অনেকটা অলস সময় পার করছে।
এমন ঘটনার পিছনে একটিই কারন সেটি হচ্ছে করোনা নামক অদৃশ্য জীবানুকভিড১৯ বা করোনা ভাইরাস । যার আতংকে এখন আর কেউ অসুস্থ্ হলেও হাসপাতালে থাকতে চাচ্ছে না। খুব বেশী রোগী মুমূর্ষু হলে নিরূপায় হয়ে থাকছেন হাসপাতালে।
অনেকের মতে করোনার কারনে হাসপাতালে ভয় লাগে এবং যানবাহনও যথেষ্ট পরিমান না থাকায় হাসপাতালে থাকছেন না।
তবে হাসপাতালের আউটডোরে আগে যেখানে অনেক রোগী ভীড় করতো ডাক্তার দেখাত, সেখানেও রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে।
১০০ শয্যার রাঙামাটি জেনারেল হাসাপাতটিতে সব সময় নির্দিষ্ট সংখ্যক শয্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি থাকতো।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা এম জিসান বখতেয়ার বলেন, আমার ছেলের রাতে হঠাৎ পেট ব্যাথা শুরু হয় উপায় না দেখে হাসপাতাল নিয়ে আসি ডাক্তার দেখাতে। ডাক্তার দেখে হাসপাতালে ছেলেকে ভর্তি করাতে বলে আমরা চাইনি হাসপাতালে থাকতে, তারপরও অনেকটা বাধ্য হয়েই ভর্তি করে রেখেছি। ছেলেকে ভর্তি করিয়ে দেখি পুরো হাসপাতাল অনেকটা ফাঁকা, মুলত করোনা আতংকে হাসপাতালে থাকতে চাই নি।
স্বপন দে নামে আরেকজন বলেন, বুকের ব্যাথার কারনণ হাসপাতালে এসেছি, ডাক্তার আমাকে ভর্তি হতে বলেছে। কিন্তু হাসপাতাল একদম ফাঁকা থাকায় আর করোনার ভয়ে আমি নিজে লিখিত দিয়ে বাসায় চলে এসেছি।
একজন ক্যন্সার রোগীর স্বজন জানান, আমার বাবার গলার ব্যথাটা প্রচন্ড বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করেছি, একদম নিরব হাসপাতাল, রাতে অনেকটা ভয়ও লাগে।
এ বিষয়ে রাঙামাটি হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক, শওকত আকবর বলেন, করোনার জন্য যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে রোগী কম আসছে। আমাদের হাসপাতালের অর্ধেক রোগী বিভিন্ন উপজেলার ও রাণীরহাট এলাকার। আগে যে পরিমাণ রোগী হতো, তার দশ ভাগের এক ভাগও এখন হয় না। রোগী খুব বেশী গুরুতর না হলে হাসপাতালে আসছে না। মূলত যোগাযোগহীনতা ও করোনার ভয়েই হাসপাতালমুখি হচ্ছে মানুষ,এমন ভাবনার কথা জানালেন এই চিকিৎসকও।