পার্বত্য জেলা শহর রাঙামাটিবাসির জন্য যেনো অভিশপ্ত হয়ে উঠেছে তাদের সবচে নির্ভরযোগ্য ঠিকানা রাঙামাটি সদর হাসপাতালটি।
করোনার ‘হটস্পটে’ হয়ে উঠায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির স্বাস্থ্য সেবা। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের ইনচার্জ করোনা পজেটিভ হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে সকল প্রকার সার্জারি।
যদিও স্বাভাবিক প্রসূতিসেবাসহ অন্যান্য চিকিৎসা সেবা চলমান রয়েছে বলে আশ্বস্ত করেছেন জেলার সিভিল সার্জন ডা: বিপাশ খীসা।
দেশে করোনার রোগী শনাক্ত হওয়ার ৬১ দিনের মাথায় গত ৬ মে ১ জন নার্সসহ ৪ জন শনাক্ত হয় রাঙামাটিতে। এখন পর্যন্ত রাঙামাটিতে দুই জন চিকিৎসক, ৪ জন নার্স, ১ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও ১ জন আয়া করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। তাদের সংস্পর্শে আসা ২৪ জন নার্স ও চিকিৎসককে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে ১০ জন চিকিৎসক ও ৫০ জন নার্সের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রামে প্রেরণ করা হয়েছে।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডাঃ শওকত আকবর খান বলেন, করোনা পজিটিভ ব্যক্তিদের সংস্পর্শে যারাই এসেছেন তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে এবং বাকীদের দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু শুরুতে এভাবে চিকিৎসকরা যদি আক্রান্ত হন তাহলে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া কঠিন হবে। এসব কারণে রোগির সংখ্যা কমেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা শুরুর পর থেকেই রোগি সংখ্যা কিছুটা তো কমেছেই।
রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা বলেন, যদি দ্রæততম সময়ের মধ্যে নমুনার ফলাফল পাওয়া যেত তাহলে আরও সর্তক হওয়ার সুযোগ পেতাম। তবুও আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা সকলকে আলাদা রাখা রয়েছে এবং যারাই দায়িত্ব পালন করছেন আরও সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রাঙামাটির পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন হোসেন চৌধুরী বলেন, যারাই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাবেন অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। একই সাথে চিকিৎসকদের রাঙামাটি-চট্টগ্রাম আসা যাওয়া বন্ধ করতে হবে এবং তাদের জন্য একটি থাকার জায়গায় ব্যবস্থা করতে হবে। সাথে সাথে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দ্রæত পাওয়ার ব্যবস্থা করা অথবা সম্ভব হলে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নিতে হবে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, রাঙামাটিতে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের ব্যাপারে চেষ্টা করে যাচ্ছি। নমুনার ফলাফল আরও দ্রæত কিভাবে পাওয়া যায় সেই ব্যাপারে কাজও চলছে। যাদের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে তাদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা গেলে আক্রান্তের সংখ্যা আরও কম হতো। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ঈদকে সামনে রেখে নতুন করে কেউ যাতে রাঙামাটিতে প্রবেশ করতে না পারে এবং কেউ বাহির হতে না পারে সেজন্য আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।