পার্বত্য জনপদ রাঙামাটিতে ভয়াবহ কোভি৬-১৯ করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষের বাঁচানোর যুদ্ধে সামনের সারিতে থাকা ছয়জন করোনা যোদ্ধা, যুদ্ধে জয়ী হয়ে অস্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে থেকে বাড়ি ফিরেছেন।
শুক্রবার বিকেলে শহরের অস্থায়ী আইসোলেশন কেন্দ্র থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের বিদায় জানানো হয়।
সুস্থ হওয়াদের মধ্যে করোনা যুদ্ধে সামনের সারিতে থাকা দুই পুলিশ সদস্য ও রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের চার স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় করোনার নমুনা পরীক্ষায় ফলাফল নেগেটিভ আসায় তাদের হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ, সিভিল সার্জন অফিসের করোনা বিষয়ে ফোকাল পার্সন ডাঃ মোস্তফা কামাল, ডাঃ আয়শা আক্তার সহ তাদের সাথে কাজ করা সহকর্মীরা।
সুস্থ হওয়া প্রত্যেকের মুখে এক অন্য রকম আনন্দ লক্ষ্য করা যায় এবং প্রত্যেকেই প্রয়োজনে প্লাজমা দিতেও প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন।
এক স্বাস্থ্য কর্মী বলেন, সকলের সহযোগিতা ও সৃষ্টিকর্তার করুনায় এখনো সুস্থ আছি। প্রথম যখন পজেটিভ আসল, তখন কিছুটা ভেঙ্গে পড়েছিলাম, পরে আস্তে আস্তে সব সামলে নিয়েছি।
সুস্থ হওয়া এক পুলিশ সদস্য বলেন, করোনাকে ভয় করলে জয়ী হওয়া যাবে না। আমি নিজে মনোবল শক্ত রেখেছি এবং পরিবারের সকলকে মনোবল শক্ত রাখতে বলেছি। মনোবল শক্ত ছিলো বলে যে রোগের কোন ঔষুধ বের হয়নি এমন অদৃশ্য ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করেছি এবং বিজয়ী হয়েছি।
আইসোলেশনে থাকা রোগীদের দায়িত্ব পালনকারী ডাঃ আয়শা আক্তার বলেন, রাঙামাটিতে প্রথম ছয় জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়। আমাকে যখন তাদের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হলো তখন আমি আমার দায়িত্বটি সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করেছি। ঝুঁকি তো অবশ্যই ছিল, আর ঝুঁকি জেনেই মানুষের সেবা করতে এই পেশায় আসা। এখন সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন, মূলত এখানেই মনের শান্তি।
সিভিল সার্জন অফিসের করোনা বিষয়ে ফোকাল পার্সান ডাঃ মোস্তফা কামাল বলেন, আইসোলেশনে থাকা ছয় জনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় নমুনার ফলাফল নেগেটিভ আসার তাদের আজ থেকে ছুটি দেওয়া হলো।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপষ রঞ্জণ ঘোষ বলেন, করোনা ভাইরাস দেশে প্রকোপ শুরু হওয়ার সাথে সাথে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদস্যরা সর্বদা মাঠে ছিল এবং স্বাস্থ্য কর্মীরাও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অদৃশ্য ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করে জয়ী সাহস দিতে রাঙামাটি পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাদের সাথে স্বাক্ষাত করতে আসা।
প্রসঙ্গত, রাঙামাটিতে গত ৪মে প্রথম করোনা সনাক্ত হয়। রাঙামাটি সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে করোনার নমুনা প্রেরণ করা হয়েছে ১২০৮ জনের এর মধ্যে ফলাফর পাওয়া গেছে ১০২০ জনের। ৭০ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া যায় এবং তাদের মধ্যে ৩২ জন সুস্থ হয়েছেন। এই ৬ জন সুস্থ হওয়া ৩২ জনেরই অংশ।