ওসিসহ চার পুলিশ সদস্যকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ
বান্দরবানে সরকারি কর্মচারীকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়ায়

বান্দরবানে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কর্মচারী মেহ্লাঅং মারমাকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়ার অপরাধে সদর থানার ওসিসহ ৪ পুলিশ কর্মকর্তাকে সশরীরে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে আদালত। বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসান এর আদালত বুধবার বিকালে এ আদেশ দেন। অভিযুক্তরা হলেন- সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, সেকেন্ড অফিসার এসআই বিপুল চন্দ্র রায়, ডিউটি অফিসার এসআই মজিবুর রহমান, এসআই প্রণব কান্তি দাশ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান জেলা জজ আদালতে কর্মরত জারীকারক মেহ্লা অং মারমা গতমাসের ১০ জুন দুপুরে একটার সময় বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজের নির্দেশক্রমে করোনা সুরক্ষা সামগ্রী ও বিভিন্ন অফিসিয়াল চিঠিপত্র নিয়ে বিজ্ঞ বিচারকের বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়স্থ বাসায় মোটর সাইকেল যোগে যাচ্ছিলেন। এসময় সদর থানার সম্মুখে এসআই প্রণব কান্তি দাশের নেতৃত্বাধীন পুলিশের টহল টিম পথরোধ করে এবং তার পরিচয় ও গমনস্থল জানতে চাইলে সে তার পরিচায় ও গমনস্থল সম্পর্কে অবগত করে। ভার্চুয়াল আদালতের চলমান কার্যক্রমে সহায়তার জন্য বিজ্ঞ বিচারকের নিকট যাচ্ছিল মর্মে অবগত করা সত্তে¡ও দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা এসআই প্রণব কান্তি দাশ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া যাওয়া যাবে না বলে অধিনস্থ দুইজন কনস্টেবলকে দিয়ে জারীকারক মেহ্লা অং মারমাকে মোটর সাইকেলসহ থানায় আটক করে রাখেন। থানার ডিউটি অফিসার মজিবুর রহমান গাড়ির চাবি নিয়ে নেন।
উক্ত ঘটনায় আদালত সমনজারী করার পর ঐদিনই বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসান এর আদালতে (আমলি আদালতে) সেকেন্ড অফিসার এসআই বিপুল চন্দ্র রায়, এসআই প্রণব কান্তি দাশ, কনস্টেবল সঞ্জয় বণিক ও কনস্টেবল স্মরণ বড়ুয়া উপস্থিত হয়ে তাদের লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। কিন্তু আদালতের নিকট তাদের লিখিত বক্তব্য সঠিক ও গ্রহণযোগ্য হয়নি মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান করায় এবং উপর্যুক্ত কর্তৃপক্ষকে অবগত না করে উক্ত সরকারি কর্মচারীকে বেআইনীভাবে আটক করায় বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, সেকেন্ড অফিসার এসআই বিপুল চন্দ্র রায়, ডিউটি অফিসার এসআই মজিবুর রহমান, এসআই প্রণব কান্তি দাশকে ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু গত ২১ জুলাই পর্যন্ত কোন তারা কোন ধরণের সময়ের জন্য প্রার্থনাও করেননি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বেঞ্চ সহকারি রিয়াজুল ইসলাম সজিব জানান, নোটিশের কোনো জবাব এবং সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ না দর্শানোর কারণে আদালত আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে ওসিসহ ৪ পুলিশ কর্মকর্তাকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর জন্য পুনরায় নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় ব্যর্থতার দায়ে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।