রাঙামাটির কাউখালীর শিশু সদনের ছয় শিক্ষার্থীর চিকিৎসা এখনো চলেছ পাড়ার বৈদ্যের মাধ্যমে। আর এতেই ভরসা কর্তৃপক্ষের। প্রশাসনের চাপের মুখে দুই শিক্ষার্থীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করালেও আবার তাদের হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। হাসপাতালে ভর্তি করা দুই শিক্ষার্থীকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে দাবী করেছে শিশু সদন কর্তৃপক্ষ।
চার দিনেও স্বাভাবিক হয়নি আশ্রমের স্বাভাবিক পরিবেশ। কথিত ভূত আতংক এখনো কাটেনি। ভয়ে অনেক ছাত্র-ছাত্রী বাড়ী চলেগেছে। যে কজন অসুস্থ শিক্ষার্থী আছে তাদেরও পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা পাইসামং মারমা (মেম্বার)।
ঘটনার পর ৪ দিন পার হলেও শুক্রবার দুপুরে মৈত্রী শিশু সদনে গিয়ে দেখা যায়, অসুস্থ্য ৬ কিশোরীর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ্য দু’জনকে হাসপাতালে না রেখেই তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। অবশিষ্ট ৪ কিশোরী পূর্বের মতই বিছানায় পড়ে ছটফট করছে। আর কবিরাজ ঝাঁড়ফুক করছেন। মাঝে মাঝেই মন্ত্র আওড়িয়ে লাঠি দিয়ে গুঁতোও মারছেন। নিঃশব্দে কিছুটা দূর থেকে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা তা দেখছেন।
এদিকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান পরিচালক অংচিনু মারমা (শ্রমন) যাকে দেখলেই মেয়েরা ভয় আঁতকে উঠে তাকে আজ আশ্রমে পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা পাইচামং মারমা জানান, জরুরী কাজে তাকে চট্টগ্রাম যেতে হয়েছে। দু’একদিনের ভিতরেই সে প্রতিষ্ঠানে ফিরে আসবে।
উন্নত চিকিৎসা কেনো করা হচ্ছেনা এমন প্রশ্নের তিনি জানান, কয়েক মাস আগে এক শিক্ষার্থীর এরকম আচরণ করায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার পর শিক্ষার্থীর অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় পরক্ষনে তাদের পরামর্শেই এক হুজুরের মাধ্যমে ঝাড়-ফুক করে তাকে সুস্থ করা হয়। এবারও তাদের আচরণ একইরকম হওয়ায় কবিরাজের মাধ্যমে চিকিৎসা করাচ্ছি। তারপরও প্রশাসনের নির্দেশের পর দু’জনকে কাউখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছি। পড়ে তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেই। তাছাড়া হাসপাতাল থেকে একজন ডাক্তার এসে ঔষধ লিখে দিয়েগেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মৈত্রী শিশু সদনের দুই কিশোরীকে ভর্তি করা হলেও রাত ৮ টার পর তান্ত্রিক চিকিৎসার কথা বলে তাদের হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে আক্রান্ত কিশোরীদের হাসপাতালের পরিবর্তে বার বার লোক চক্ষুর আড়ালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার কারণে বিষয়টি নিয়ে বেশ রহস্যের সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে ঘটনা তদন্তে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুইমিপ্রু রোয়াজার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এ টিম রবিবার ঘটনাস্থলে তদন্তে যাবেন বলে জানা গেছে।