বান্দরবান প্রতিনিধি
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার সীমান্তে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্মাণ করা এক সেতুতেই পাল্টে গেল পাড়ার ২ হাজার মানুষের জীবনযাপন চিত্র। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার হিমাক্রী পাড়া এলাকার ডলুঝিরির কারণে কষ্টে দিনযাপন করতো এলাকার বাসিন্দারা। বর্ষাকালে ঝিরিতে পানি বেড়ে গেলে যাতায়ত প্রায় বন্ধ থাকতো, দু-পাড়ের বাসিন্দারা পোহাতে হতো দুর্ভোগ। অন্যদিকে কৃষকদেরও উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারজাতকরণে ভোগান্তির কারণে পচে যেতো নানান সময়ে।
তবে দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান শেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান ইউনিটের বাস্তবায়নে ডলুঝিরির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ মিটারের একটি গার্ডার ব্রিজ। গত শুক্রবার পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সেতুর উদ্বোধন করেন। সেতু নির্মাণের ফলে ডলুঝিরির আশে-পাশের ৬ পাড়ার ২ হাজার জনসাধারণ এখন সহজেই যাতায়াত করতে পারছে। সকাল-সন্ধ্যা যানবাহন চলছে আর সকলের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দার জানান, এ সেতু নির্মিত হওয়ার আগে প্রায় ৩ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পায়ে হেটে প্রধান সড়কে আসতে হতো। বর্ষাকালে ঝিরিতে পানি বেড়ে গেলে ঘরবন্দি থাকতে হতো। যে কারণে নিজস্ব জমিতে উৎপাদিত ফসল জমিতেই নষ্ট হয়ে যেতো। সেতু নির্মাণের ফলে সবজি ও ফলমূল বাগান থেকে সহজেই জেলা সদরে আনা যাচ্ছে আর যাতায়াত করা যাচ্ছে অনায়াসে।
বান্দরবানের রুমা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উহ্লাচিং মারমা জানান, আগে পরিবহণের কোনো সুযোগ-সুবিধা ছিলো না। রাত বিরাতে কারো কোন অসুখ দেখা দিলে নৌকা করে অনেক কষ্ট করে হাসপাতালে নিতে হতো। বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় ও পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপির উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই ব্রীজটি নির্মাণের ফলে এই এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপঁক উন্নয়ন হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ জানান, ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ডলুঝিরির ওপর ৬০ মিটারের একটি গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতু নির্মাণের ফলে প্রায় ৬ পাড়ার মানুষ এখন সহজেই চলাচল করতে পারছে। সেতুটি আরও আকর্ষণীয় করতে ও রাতে চলাচলের সুবিধার জন্য সেতুর ওপরে এবং দুই পাশেই দেয়া হয়েছে কয়েকটি সোলার লাইট। আগামীতে দই ুপাড়ের সড়কগুলো আরও প্রশস্ত করা এবং পাড়ার বিভিন্ন সড়কগুলো উন্নয়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে এবং আগামীতেও বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নে কাজ করবে।