
রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নের এগুজ্জ্যাছড়ি গ্রামে ড. দীপংকর ভান্তে’র কুটির নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের হামলায় পানের বরজ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি আঞ্চলিক দলের সন্ত্রাস,চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে দেশনা দেয়ায়,সেই দলটির সমর্থকরা ভান্তের অনুসারিদের নানাভাবে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার দুপুরে ফারুয়ার এগুজ্জ্যাছড়িতে ৭টি পানের বরজ দুর্বৃত্তরা পুড়িয়ে দিয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন। তাদের দাবি ৫ থেকে ৬ একর জমিতে ৭টি পানের বরজের বাজার মূল্য ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকার পান ছিলো। ৭টি পান বরজের মালিকরা হলেন- চিত্র জয় তঞ্চঙ্গ্যা, লাল থোই তঞ্চঙ্গা, শুক্র কুমার তঞ্চঙ্গা, কেমং তঞ্চঙ্গা, দুখ বালা তঞ্চঙ্গা, চিলু তঞ্চঙ্গা।
প্রাণের ভয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করছে না বলে জানিয়েছেন ফারুয়া ইউনিয়নের এগুজ্জাছড়ি গ্রামের স্ব ধর্ম সুরমা যুব পরিষদের প্রধান সম্বন্বয়ক হৃদয় বিকাশ তঞ্চঙ্গা।
তিনি আরো বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি আরো দুটি পানের বরজ ও গত মঙ্গলবার দুটি বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুন দেয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ড. দীপংকর ভান্তে একটি কুটির তৈরি করে ধর্মের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, তিনি সন্ত্রাসী, চাদাবাজী, মানুষ হত্যা, মদ পান না করার জন্য সব সময় বলে থাকানে।
তিনি অভিযোগ করেন, জেএসএস এর চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এসব কাজ নিয়মিত করে আসছে,কারণ তারা বুঝতে পেরেছে ভান্তের দেশনার কারনে গ্রামের সাধারন মানুষ ঐসব সন্ত্রাসীদের ঘৃণা করতে শুরু করেছে। এ কারণে তারা ড. দীপংকর ভান্তেকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে এবং কুটির ভেঙ্গে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছে। আমরা যারা ভান্তে এবং কুটিরের পক্ষে কাজ করি তাদের ঘর ও পানের বরজ পুড়িয়ে দিচ্ছে তারা।
তিনি আরো বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি পানের বরজ পুড়িয়ে দেয়ায় ফারুয়া জেএসএস এর সভাপতি চন্দ্র তঞ্চঙ্গা সহ আরো ৪ জনের নামের থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার অন্য আসামীরা হলেন, তেজেন্দ্র লাল তঞ্চঙ্গা, মধু কুমার তঞ্চঙ্গা, প্রদীপ তঞ্চঙ্গা (অত্তা), মিলন তঞ্চঙ্গা। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, মামলা করেও কোন কিছু হচ্ছে না, এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারে নি।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের আরেকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, জেএসএস সন্ত্রাসীরদের কারনে এলাকার মানুষ আতঙ্কে আছে। ধর্মের কাজ না করার জন্য তারা গ্রামের সাধারণ মানুষের আর্থিক করছে তারা। জুমের কোন সফল তোলা যাচ্ছে না, ফারুয়া থেকে কোন বোর্ড চলাচল করতে দেয় না তারা, পারলে আপনারা এসে ঘুরে দেখে যান আমরা কি কষ্টে আছি।’
তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মুখপাত্র ও দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা বলেছেন, এটা এলাকাবাসির স্থানীয় সমস্যা। এর সাথে আমাদের পার্টির কোন সম্পর্ক নেই। যারা এর সাথে জেএসএস কে জড়াচ্ছেন তারা ঠিক বলছেন না।
বিলাইছড়ি থানার অফিসার্স ইসচার্জ মোঃ নাসির উদ্দিন জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে আসবে। দুর্গম এলাকা হওয়ার কারনে অভিযান চালানো খুব কঠিন। জেএসএস কর্মী কিনা সেই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন অভিযোগকারী বলছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।