সকাল ন’টা বাজার পরপরই একের পর এক শিক্ষার্থী আর অভিভাবকরা আসতে শুরু করেন স্কুল প্রাঙ্গণে। তখনো পরীক্ষা শুরুর দুঘন্টা দেরি। আবেগ আর উচ্ছাসের বাঁধভাঙ্গা প্রকাশটা ছিলো এমনই। আয়োজকরা অবশ্য তারো আগেই চলে এসেছেন পরীক্ষা হলে,চলছিলো শেষ হওয়া কাজগুলোর ফলোআপ। দশটা বাজার আগেই শিক্ষার্থী আর অভিভাবকে লোকারণ্য পুরো রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ।
পরীক্ষা শুরুর আধঘন্টা আগে খুলে দেয়া হয় পরীক্ষা হলের প্রধান ফটক। সাড়িবন্ধভাবে দাঁড়ানো স্বেচ্ছাসেবকরা একে একে শিশু কিশোর পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা রুমে পৌঁছে দেন। শুরু হয় বহুল আলোচিত দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম মেধাবৃত্তি ২০১৭ এর আয়োজন। প্রথমবারের মতো এই আয়োজনটিতে যে ব্যাপক সাড়া তা বেশ আলোচনার খোরাক জোগায় শহরেও।
দুইঘন্টা ব্যাপি অনুষ্ঠিত এই বৃত্তি পরীক্ষায় রাঙামাটি শহরের ১৭ টি প্রাথমিক,মাধ্যমিক স্কুলের প্রায় সাতশত শিক্ষার্থী অংশ নেন। তৃতীয় শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত এই বৃত্তিতে অংশ নিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ছিলো আরো অনেক বেশি। কিন্তু আয়োজনের সীমাবদ্ধতা ও প্রথমবার হওয়ায় আয়োজকরা সাতশতেই বেঁধে দেন গন্ডি।
পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, রাঙামাটি জেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা, সহকারি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্মা ¯িœগ্ধা চাকমা, সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা,রাঙামাটি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা পরীক্ষা হল পরিদর্শন করেন।
পুরো আয়োজনটি ছিলো ব্যাপক মানুষের অংশগ্রহণে সুশৃংখল একটি সুন্দর অনুষ্ঠান। বৃত্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর মাঠে শত শত অভিভাবকের হাতে তুলে দেয়া হয় রবিবারে দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম পত্রিকা। টানা দুইঘন্টার মনোটোনাস প্রতীক্ষায় যেনো প্রাণ যোগালো পত্রিকাটি টেনশনে থাকা অভিভাবকদের।
দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম মেধা বৃত্তি পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক লিটন দেব এবং সদস্য সচিব সাইফুল বিন হাসান, বৃত্তি পরীক্ষা সফলভাবে আয়োজনে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করায় রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষক কর্মচারি এবং রাঙামাটির প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতি,সহকারি শিক্ষক সমিতি এবং বৃত্তি কার্যক্রম সম্পৃক্ত সবার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, এটি একটি ব্যতিক্রমি প্রতিযোগিতামূলক বৃত্তি পরীক্ষা। এতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর স্ততস্ফূর্ত অংশগ্রহণ সত্যিই মুগ্ধকর। তিনি এই উদ্যোগের সাফল্য কামনা করে বলেন, এমন ছোট ছোট উদ্যোগগুলোই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা বলেন, পুরো আয়োজনটি খুবই গোছালো এবং সৃশৃংখল। আমি আয়োজক এবং আয়োজনের সাফল্য কামনা করছি। আমরা শিক্ষা বিভাগের এই ধরণের সকল ভালো কাজে পাশে থাকব।
পরীক্ষা পরিদর্শনে আসা রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেছেন, আমি এমন আয়োজনে সত্যিই মুগ্ধ। আপনাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানচ্ছি এবং এই ধরণের মহতী উদ্যোগের পাশে থাকতে চাই আমি ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। তিনি এসময় সার্বিক সহযোগিতা করার আশ^াস দেন।