
নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমাকে হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তার দাহক্রিয়ায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে সাধারন মানুষের উপরে বেপরোয়া গুলিবর্ষনে ইউপিডিএফ-গনতান্ত্রিক এর শীর্ষ নেতা, দলটির আহ্বায়ক তপনজ্যোতি চাকমা বর্মাসহ অন্তত: ৫ জন নিহত এবং আরো অন্তত: ৮ জন আহত হয়েছে। ঘটনাস্থলেই বর্মার সাথে নিহতরা হলেন সুজন চাকমা ও টনক চাকমা। এরপর হাসপাতালে আনার পর মারা গেছেন মাইক্রোবাসের চালক সজীব ও সেতুলাল চাকমা। দুপুর বারোটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে তিনজন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(এমএনলারমা)’র নেতাকর্মী, একজন গাড়ীর চালক এবং অন্যজন ইউপিডিএফ-গনতান্ত্রিক এর শীর্ষ নেতা তপনজ্যোতি চাকমা।
তপজ্যোতি চাকমা বর্মার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলটির মিডিয়া উইংয়ের দায়িত্বে থাকা লিটন চাকমা। তিনি এই হত্যাকান্ডের জন্য ইউপিডিএফকে দায়ি করে বলেছেন,শক্তিমান চাকমাকে হত্যা করার পর তপনজ্যোতি চাকমা বর্মাকে হত্যার মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে একক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিজেদের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠার জন্য তারা একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে।
রাঙামাটির পুলিশ সুপার আলমগীর কবিরও নানিয়ারচর-মহালছড়ি সীমান্তে একটি হামলায় তিনজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আহত ও নিহতরা সবাই শক্তিমান চাকমার দাহক্রিয়ায় যোগ দিতে সেখানে যাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছে হামলায় আহতরা। আহতদের মধ্যে আটজনকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত: তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি-এমএনলারমার শীর্ষ নেতা সুদর্শন চাকমা।
আহতরা জানিয়েছেন,শক্তিমান চাকমার দাহক্রিয়ায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে মেজরপাড়া ও কেরেঙ্গাছড়ি এলাকায় গাড়ীবহরে গুলিবর্ষন শুরু করে দুর্র্বৃত্তরা। এসময় বহরে থাকা একটি মাইক্রোবাসে বেপরোয়া গুলি বর্ষনে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ৩ জন । আহত হয় অনেকেই। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন সম্প্রতি ইউপিডিএফ থেকে বেরিয়ে গিয়ে নতুন দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা ইউপিডিএফ-গনতান্ত্রিক এর আহ্বাক তপনজ্যোতি চাকমা বর্মাও।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটায় রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট শক্তিমান চাকমাকে (৫২) গুলি করে হত্যা করা হয়। নানিয়ারচর বাজার থেকে উপজেলা পরিষদের নিজ কার্যালয়ে যাওয়ার সময় দুইজন অস্ত্রধারি দুর্বৃত্ত তাকে গুলি করে হত্যা করেএই সময় তার সাথে থাকা রূপম চাকমা (৩৫) নামের আরো একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। এডভোকেট শক্তিমান চাকমা ২০১০ সালে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি থেকে বের হয়ে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(এম এন লারমা) নামে যে নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে তার অন্যতম উদ্যোক্তা ও শীর্ষ নেতা ছিলেন। তিনি সর্বশেষ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। শক্তিমান চাকমার সাথে থাকা আহত রূপম চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএনলারমা)র নানিয়ারচর উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। রূপম চাকমাও এখন অজ্ঞাতস্থানে চিকিৎসাধীন আছেন।