স্কুল পড়ুয়া এক কিশোরীকে জোর করে বিয়ে দেয়ার সব আয়োজনই সম্পন্ন করে মেয়ের মা ও মামা। মেয়ের কোনো আবদারই যেনো শুনতে চায়না পরিবার। বিয়ের সব আয়োজনও সম্পন্ন। বরও এসে হাজির। এমন সময়ই কনের বাড়িতে পুলিশ নিয়ে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। ফলে বাল্য বিয়ের হাত থেকে রেহাই মিলে ওই কিশোরী। এ সময় আটক করা হয় বরসহ তিনজনকে।
সোমবার রাতে রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারস্থ ২নং পাথরঘাটায় এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারের এক ব্যক্তির মেয়ের সাথে বনরূপার আবদুল আলীর ছেলে দীন ইসলামের সাথে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হয়। ওই কিশোরী শহরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। সে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলে অভিভাবকদের বারবার বিয়ে না দেয়ার অনুরোধ করে। তার কথায় কর্ণপাত করেনি তারা। ওই কিশোরীর মা ও মামা বর পক্ষের সাথে কথাবার্তা বলে সব কিছু ঠিক করে নেয়। সোমবার রাতেই বিয়ের সব আয়োজন করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিয়ে বন্ধ করা হয়।
১ ও ২ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী এম এ মুস্তফা হেজাজী জানান, মদন নামের একজন তাঁকে সকালে ফোন করে একটি বিয়ে পড়ানোর কথা বলেন। তখন তিনি মেয়ের বয়স ঠিক আছে কিনা, জন্ম নিবন্ধন আছে কিনা জানতে চান।
জবাবে মদন বলেন, সব ঠিক আছে। কাগজপত্র ঠিক না থাকলে এবং মেয়ের বয়স ১৮বছর পূর্ণ না হলে বিয়ে রেজিস্ট্রি করবেন না বলে কাজী জানান। এশার নামাজের পর মদন কাজী সাহেবকে ফোন করে জানান, জন্ম নিবন্ধনের কাগজ এখনো হাতে এসে পৌঁছায়নি। তাই একটু দেরি হচ্ছে। কাগজ হাতে আসলে কাজীকে ফোন করবেন বলে জানান।
রাঙামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জোনায়েদ কবির সোহাগ জানান, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাল্য বিয়ের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। কনের অমতে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও মেয়ের বয়স এখনো ১৮ হয়নি। বিয়ে আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত মেয়ের মামা, বর দীন ইসলাম ও বরের বাবা আবদুল আলীকে আটক করে থানা হাজতে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ জানান, ‘বাল্য বিয়ের মতো অপরাধী কর্মকান্ডের সাথে যারা জড়িত থাকবে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।’