আলোর পথ দেখছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম

রাঙামাটিতে আলোর পথ দেখছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাক্রমে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ একইসাথে ৫০ হাইফ্লো অক্সিজেন রোগীকে অক্সিজেন সাপ্লাই দিতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিচ্ছে। এজন্য ইতোমধ্যে জেলা পরিষদ থেকে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগও জানিয়েছেন, বিভিন্ন কারিগরি বিষয় যাচাই-বাছাই শেষে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা বসানো হবে।
করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে তীব্র শ্বাসকষ্টের সময় হাইফ্লো অক্সিজেন দরকার হলেও রাঙামাটির জেনারেল হাসপাতালে হাইফ্লো অক্সিজেন রোগীকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছিল না। সাধারণ শ^াসকষ্টের রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার রাঙামাটি হাসপাতালে থাকলেও তীব্র শ^াসকষ্ট রোগীদের জন্য সে ব্যবস্থা ছিল না। এতে রাঙামাটি থেকে রোগীদের চট্টগ্রামে রেফার করা হতো। এছাড়া অনেক রোগীই হাইফ্লো অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুবরণও করে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাঙামাটিবাসীও দাবি জানিয়ে আসছিল। পিসিআর ল্যাবের পাশাপাশি সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা নিশ্চিতের জন্য করোনাকালীন সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব পবন চৌধুরীও কাজ করছিলেন। যার ফলশ্রæতিতে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জেলা পরিষদ সেন্ট্রাল অক্সিজেনের জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। এসময় জেলা পরিষদ থেকে দ্রæততম সময়ে সেন্ট্রাল অক্সিজেন বসানোর কাজ শেষ করারও নির্দেশনা দেয়া হয়।
রাঙামাটির সিভিল সার্জন বিপাশ খীসা এই বিষয়ে বলেছেন, সোমবার জেলা পরিষদের সভায় সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই বসানো জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। এই জন্য জেলা পরিষদ থেকে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। দ্রæততম সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে আমরা এটির কাজ শেষ করে নিবো। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ২-১টা কোম্পানি থেকে আমরা সম্ভাব্য খরচ নিয়েছি। আরো যাচাই-বাছাই শেষে ফাইনালি কাজ শুরু করবো। তবে কখন এই সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের সেবা শুরু হবে সে বিষয়টি নিশ্চিতভাবে এখনই বলা সম্ভব না। তিনি আরো বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব পবন চৌধুরী সেন্ট্রাল অক্সিজেনের জন্য পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলেছেন, এবং তারই প্রেক্ষিতে পার্বত্য মন্ত্রণালয় জেলা পরিষদকে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়ার নির্দেশনা দেন। সিভিল সার্জন জানায়, সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা স্থাপিত হলে একইসাথে ৫০ রোগীকে সেবা দেয়া সম্ভব হবে।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বরত সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতব্বর বলেছেন, সাধারণ মানুষ অক্সিজেন নিয়ে কষ্ট পাচ্ছিল। সাধারণ রোগীদের অক্সিজেনের তেমন কোনও সমস্যা না থাকলেও হাইফ্লো অক্সিজেন রোগীদের জন্য রাঙামাটিতে কোনও ব্যবস্থা ছিল না। দীর্ঘদিন ধরে আমরাও এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছি। সাধারণ মানুষের কষ্ট লাগবে জেলা পরিষদ থেকে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই বসানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা সেন্ট্রাল অক্সিজেন বসানোর জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা যখনই কাজ শুরু করবে পরিষদ টাকা দিয়ে দিবে।
এ বিষয়ে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ বলেন, আমরা দীর্ঘসময় ধরে করোনা প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগেও যেগুলো অপূরণ রয়েছে, সেটাও যাতে দ্রæততম সময়ের মধ্যে হয়, তার জন্যও কাজ করছি। যার ফলে দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব পবন চৌধুরী স্যারের মাধ্যমে বসুন্ধরা গ্রæপ থেকে আমরা পিসিআর ল্যাবের টাকা পেয়েছি। এরপর আমি নিজেই সেন্ট্রাল অক্সিজেনের জন্য পার্বত্য সচিব স্যারের সাথেও যোগাযোগ করেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠি দিতে, আমি সেটাও দিয়েছি। এছাড়া পবন চৌধুরী স্যারও ব্যক্তিগতভাবে পার্বত্য সচিব স্যারের সাথে এই বিষয়ে কথা বলেছেন। পার্বত্য মন্ত্রণালয় থেকে জেলা পরিষদকে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রæততম সময়ের মধ্যে রাঙামাটিতেও সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু হবে।