
২৯৯ নং রাঙামাটি আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক পার্বত্য উপমন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ান বলেছেন, ‘আওয়ামীলীগ চুক্তি করেছে, কিন্তু দীর্ঘ ২১ বছরেও সেই চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি। চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামে নানা ধরণের খুন-খারাবি চলছে।’
সোমবার সকাল ১১টায় রাঙামাটি জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম।
মনিস্বপন দেওয়ান বলেন, ‘আজ ১২বছর পর আমি রাজনীতিতে এসেছি। আপনারা সবাই জানেন বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা। একপেশী আসনে আজ এ দেশের গণতন্ত্র খর্ব হয়েছে। সারাদেশে গাযেবি মামলা, খুন, গুম, নানা কিছু হচ্ছে। সারাদেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে। এ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টে ইশতেহার আপনারা কিছু দিনের মধ্যে জানবেন। ঐক্যফ্রন্ট থেকে যদি ইশতেহারে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিষয় তুলে ধরা না হয়, তাহলে আমি নির্বাচনে জয়ী হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাবো। যাতে করে এখানে চলমান রক্তপাত- ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের অবসান হয়।’
মনি স্বপন বলেন, ‘শুধু মুখরোচক কথাবার্তা বলে লাভ নেই। সেভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়, আমরা সেভাবেই কাজ করবো। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ন আবাসস্থল চাই। আমি ২০০৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর এখানে কোনও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-সংঘাত ঘটেনি। সেক্ষেত্রে আমি সফল। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্প্রতি পরিবেশে নানান ধরণের বেকার সমস্যাও দূরীকরণ করেছে। বিশেষ করে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বার বার যাচাই-বাচাই করেছি। কিছুদিন আগে আমার এক আত্মীয়ের চাকরি নিতে ৯ লাখ টাকা লেগেছে; তাও নাকি স্বস্তায় হয়েছে ।’
সভায় সাবেক উপমন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ান বলেন, ‘ যারা এই আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সবাই আমরা প্রতিদ্বন্দ্বি। দেশে এখনও নির্বাচনের মাঠ সকল দলের জন্য সমান হয়নি। নির্বাচনের মাঠ সমতল করার জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা আপনাদেরও (সাংবাদিকদের) সহযোগীতা চাই।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকলে দাম্ভিকতা আসে, যার খেসারত বিএনপিকে তিলে তিলে দিতে হয়েছে। আজ এই থেকেই আমরা শিখছি। তবে যার জন্য ক্ষমতায় আসা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। দাম্ভিকতা নিয়ে রাষ্ট্রশাসন করা যায় না। আমি যদি নির্বাচনে জয়ী হলে পার্বতৗ চট্টগ্রামে গোমট বাধা পরিবেশ পরিস্থিতি নিরসনে কাজ করবো। যাতে করে এখনকার মানুষ এই গোমটবাধার পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পায়। সারাদেশেই আজ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে প্রক্রিয়া আরও সুফল রাখতে গনতন্ত্র অব্যাহত, গণতান্ত্রিক পরিবেশ শক্তিশালী করার জন্য আপনাদের সহযোগতী কামনা করছি।’
সাংবাদিকদের কয়েকটি প্রশ্নের জবাবে এলডিপির সাবেক এই নেতা বলেন, ‘আমি ২০০৬ সালে অভিমান থেকেই বিএনপিকে ছেড়ে গেছি। বলতে গেলে তখন বিএনপির স্বর্ণযুগ ছিলো। আজ বিএনপির দুর্সময়ে আবারও দলে ফিরে এসেছি। এবার আপনারাই বলেন আমি বসন্তের না দুর্সময়ের কোকিল? ২০০৬ সালে আমি এই আসনে নির্বাচিত হওয়ার পর খালেদা জিয়া আমাকে উপমন্ত্রী বানিয়েছেন, সম্মান দিয়েছেন। আমি বিএনপির প্রতি কৃতজ্ঞতা নিয়েই আবারও দলে ফিরেছি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম পনির, যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুন, শহর নগর বিএনপির সভাপতি এস এম শফিউল আজম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাসেত অপু, জেলা যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম শাকিল, সাধারণ সম্পাদক আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফারুক আহমেদ সাব্বির, সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর সুমন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।