কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অংসুই ছাইন চৌধুরীর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু মহল ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের কাছে উড়ো চিঠি পাঠিয়ে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করাসহ তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বুধবার দুপুরে কাপ্তাই প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, গত ৩১ আগস্ট ৪নং কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়্যারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফের মাধ্যমে জানতে পারেন যে তার কাছে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে একটি চিঠি আসে। চিঠিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে তার বিরুদ্ধে ৫ জনের স্বাক্ষর যুক্ত অভিযোগ প্রেরণ করা হয়। চিঠিতে অভিযোগকারীদের নামগুলো হলো সুইনুচিং মারমা, মনোয়ারা বেগম, মোঃ হানিফ বাবুল, পরিমল কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা ও অজয় সেন। তারা সকলেই কাপ্তাই আওয়ামী লীগ,অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সাথে জড়িত। এই চিঠির অনুলিপি প্রেরণ করা হয় পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি, রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা হতে নির্বাচিত সাংসদ দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে। তিনি এই চিঠি পড়ে জানতে পারেন যে, তার প্রাণপ্রিয় কিছু সহযোদ্ধার নাম ব্যবহার ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তার সম্মানহানি এবং রাজনৈতিক ভাবে তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য আওয়ামীলীগ এবং গোয়েন্দা সংস্থার কাছে মিথ্যা ও বানোয়াট কিছু অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি এই মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো জানান, দু’বার তিনি জেলা পরিষদ সদস্য এবং একবার কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব পালন করেছেন। দায়িত্ব পালনে তিনি কখনও অন্যায় এবং দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেননি। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর ব্যাংক লোনের মাধ্যমে শীলছড়িতে জায়গা ক্রয় করা হয়েছে। অথচ এই কুচক্রি মহল ভুয়া অভিযোগ করেছেন যে, তিনি নাকি জোর করে এই জায়গা দখল করেছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বিএনপি কিংবা প্রতিপক্ষ কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সাথে তার কোন সখ্যতা নেই। তিনি জানান, উড়োচিঠির সাথে সংযুক্ত বিএনপি নেতা ডাঃ রহমতউল্লার নাম প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ ছবিতে যেই ছবিটি সংযুক্ত করা হয়েছে তিনি কাপ্তাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মোঃ ই¯্রাফিল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ডেপুটি কমান্ডার ই¯্রাফিল হোসেন জানান, উড়োচিঠিতে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি অংসুই ছাইন চৌধুরীর সাথে তার ছবি সংযুক্ত আছে। অথচ তার পিতাকে রাজাকার বলা হয়েছে। আমি একজন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জেএসএসের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইউপি সদস্য সুইপ্রæ মারমা জানান, তাকে জেএসএসের গোয়েন্দা শাখার প্রধান বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে এবং তার সাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির সখ্যতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সুইপ্রæ মারমা জানান, তিনি ২০১৯ সালে জেএসএস হতে পদত্যাগ করেন এবং জেএসএসের সাথে বর্তমানে তার কোন সর্ম্পক নেই।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক অজয় সেন, সাবেক ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক হানিফ বাবুল, মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মনোয়ারা জাহান এবং সদস্য সুইনুচিং মারমা উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, তাদের স্বাক্ষর জাল করে এই অভিযোগ করা হয়েছে। তারা এই বিষয়ের সাথে কোনভাবে সম্পৃক্ত নয়। তারা প্রত্যেকেই এর তীব্র প্রতিবাদসহ দোষীদের শাস্তির দাবি জানান। তারা প্রত্যেকে জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অংসুই ছাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভুয়া এবং বানোয়াট।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অংসুই ছাইন চৌধুরী জানান, দুর্নীতির অভিযোগে বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ হতে কিছু নেতাকর্মী তার বিরুদ্ধে এই ভুয়া, মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ করতে পারেন। তিনি আরো জানান, রাঙামাটির নির্বাচিত সাংসদ দীপংকর তালুকদারের নেতৃত্বে আমরা কাপ্তাই আওয়ামীলীগ পরিবার ঐক্যবদ্ধ আছি।
সংবাদ সম্মেলনে কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও কাপ্তাই ইউপি চেয়্যারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ, সাবেক সহ-সভাপতি ও চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়্যারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া, কেপিএম সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, ওয়াগ্গা ইউপি চেয়্যারম্যান চিরঞ্জিত তঞ্চঙ্গ্যাসহ কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, ৫টি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ, আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উপজেলা ও ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়্যারম্যান এবং সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
