বৃষ্টি আর বর্ষনের প্রভাবে ভয় আর আতংকের শহরে পরিণত হওয়া পার্বত্য শহর রাঙামাটিতে আবারো নতুন করে শুরু হয়েছে আতংক।
রবিবার বিকাল থেকে শুরু হওয়া থেমে থেমে বর্ষন আর আবহাওয়া অধিদফতরের আগাম সতর্কবার্তা যেনো শিরদাড়া বেয়ে নতুন করে আবারো ভয়ই ছড়িয়ে দিয়েছে পুরো শহরে।
সোমবার সকালে বর্ষণের কারণে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের দেপ্প্যছড়ি এলাকায় আবারে একটি পাহাড় থেকে কিছু মাটি ধসে পড়লে সড়কটিতে কিছুক্ষণের জন্য যানচলাচল ব্যহত হয়। তবে আধঘন্টার মধ্যেই সওজ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেই মাটি সরিয়ে নিলে চালু হয় যান চলাচল।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন জানিয়েছেন, মাটি পড়ে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল ব্যহত হলেও দ্রুতই মাটি অপসারণ করা হয় এবং পথ স্বাভাবিক হয়। এটাকে পাহাড়ধস বলা যাবেনা।
এর আগেই অন্যান্য বৃষ্টিদিনের মতো রবিবার বিকাল থেকে শহরে সতর্কতামূলক মাইকিং শুরু করে জেলা প্রশাসন। ঝুঁকিপূর্ণস্থানে বসবাস করাদের সড়ে যেতে এবং সড়িয়ে নিতে দেয়া হয় বিশেষ নির্দেশনা। মাঠে নামেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পৌরসভার কাউন্সিলরা। নতুন করে চালু করা হয় ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোও।
তবে সোমবার বিকাল নাগাদ কমে আসে বৃষ্টি আর আশ্রয়কেন্দ্রে আসার আহ্বানে সাড়া দেয়নি তেমন মানুষজন। এদিন বিকালে শহরের বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরেও বাড়তি লোকজন তেমন একটা চোখে পড়েনি। রাঙামাটি সরকারি কলেজ কেন্দ্রে মাত্র ছয়টি পরিবার এদিন আবার আশ্রয়কেন্দ্রে আসেন। মঙ্গলবারও বৃষ্টির ছায়া ছিলো শহরে। সকাল থেকে মৃদু বৃষ্টি পড়ছিলো।
আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে কয়েকটি এলাকায় গিয়েও দেখা গেছে লোকজনের স্বাভাবিক বসবাস। শিমুলতলি এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রউফ বলেন, ভাই আশ্রয়কেন্দ্রে আর ভালো লাগেনা। সেখানে বসে বসে খেলে তো হবেনা। সংসার আছে ,বাড়ীঘর আছে,ভবিষ্যত আছে। তাই চলে এসেছি, আর যেতে ইচ্ছে করছেনা। এখন যে বৃষ্টি হচ্ছে এই বৃষ্টিতে মনে হয়না খারাপ কিছু হবেনা,বৃষ্টি বাড়লে তখন চিন্তা করব আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বলেন, আমরা যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতি রেখেছি। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের বলেছি কেউ যেনো ঝুঁকিপূর্ণস্থানে বসবাস না করে, কারণ আমরা আর একটি প্রাণহানিও চাইনা। যারা ঝুঁকিপূর্ণস্থান ছাড়তে চাইবেনা তাদের বাধ্য করা হবে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে আসার। মাইকিং করেও সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত,গত ১২ ও ১৩ জুন রাঙামাটি জেলায় প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধসে জেলা শহর,কাউখালি,কাপ্তাই,জুরাছড়ি এবং বিলাইছড়ি উপজেলায় ১২০ জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় অন্তত: ২ শত জন আহত হন এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয় কয়েকশত বাড়ীঘর। দুর্গতদের আশ্রয় দিতে সরকার শহরে ১৯ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলে,যেখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ আশ্রয় নেয়।
1 Comment
এইভাবে অভিরাম বৃষ্টি হলে, কি যে হবে রাঙ্গামাটি বাসিন্দাদের ।