অসুর ছাড়া দুর্গা পুজা, ভাবা যায়?? হ্যাঁ, এমনই এক ব্যতিক্রমি পুজার আয়োজন করে শহর জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে রাঙামাটির কালিন্দীপুরের দশভুজা মাতৃমন্দির। আয়োজকরা জানিয়েছেন, গতানুগতিকতার বাহিরে গিয়ে মাতৃবন্দনাকে প্রধান্য দিয়েই এবার পূজার আয়োজন করা হয়েছে।
দুর্গাপুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সৈকত দাশ রানা জানিয়েছেন, বর্তমান সময়ে সমাজে পিতা মাতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমে গেছে, ফলে সমাজে বিশৃঙ্খলা বেড়ে গেছে। তাই আমরা এবারের দুর্গা পূজায় মাতৃ বন্দনার ওপর জোর দিয়ে শুধু দুর্গা মায়ের বন্দনা করবো’
তিনি আরো বলেন, ‘ অসুর নেই, সেটা পুরোটা সঠিক নয়, মহিষতো আছে। আসলে আমরা বুঝাতে চেয়েছি মর্তে এসেই মা দুর্গা অসুরকে বধ করেছেন। তাই আমরা অসুরের অবয়বটা রাখিনি। তাছাড়া লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন, মা দুর্গা ছাড়া কার্তিক, গণেশ, লক্ষী, স্বরসতী সকলে জোড়াসনে বসা আছে। এর দ্বারা আমরা বুঝাতে চেয়েছি উনারাও মাতৃ বন্দনায় মগ্ন। সর্বোপরি আমরা গতানুগতিকতার বাহিরে আসতে চেয়েছি, আশা করি ভক্তরা এ থীমকে স্মাদরে গ্রহণ করবে।’
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দশভূজা মন্দিরে এবার প্রতিমার সাজ হয়েছে শৈল প্রপাতে মায়ের বন্দনা, পাহাড় চুড়া থেকে নেমে এসেছে ঝর্ণা ধারা তার পাদদেশে হবে মায়ের আরাধনা।
এবারে দুর্গা পুজায় কালিন্দীপুরের এই দশভূজা মাতৃ মন্দিরে ব্যয় ধরা হয়ে ৬ লক্ষ টাকা, এর মধ্যে প্রতিমা তৈরি বাবদ ব্যয় হয়েছে ৯০ হাজার টাকা, প্রতিমা কারিগর রাউজানের জিকো রুদ্র। মঞ্চ সাজসজ্জায় ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ হাজার টাকা,। বরাবরের মত এবারো কালিন্দীপুর দশভূজা মাতৃ মন্দিরে ঢাকের তালেই পূজা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
এ ব্যাপারে মিঃ রানা বলেন, দুর্গাপূজা হবে, ঢাক থাকবে না সেটা হয় না, ডিজে সংস্কৃতি হলো অপসংস্কৃতি, আমরা এটা নিয়ে কোন ছাড় দেইনা, ভবিষ্যতেও দেয়া হবেনা। এবার এই মন্দিরে রাউজানে বিখ্যাত বাদক দল আসবে, তাদের সম্মানি ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা।
এবারে পুজায় লাইটিংয়ে ব্যয় ধরা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও এবারে পুজা উপলক্ষে ৫ দিনব্যাপি অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করা হয়েছে। এগুলো জলো মহা পঞ্চমিতে সঙ্গীত প্রতিযোগীতা, মহা ষষ্ঠিতে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, সপ্তমীতে অন্ন প্রসাদ বিতরন, অষ্টমীতে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, নবমী দুপুরে মহা প্রসাদ বিতরণ এবং দশমীতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হবে।