জিয়াউল জিয়া
রাঙামাটি শহরের হিল অ্যাম্বাসেডর নামের একটি আবাসিক হোটেলকে অবৈধভাবে চোরাই বিদুৎ সংযোগ ব্যবহার করার অভিযোগে ৩ লাখ ৫২ জাজার টাকা জরিমানা করেছে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, গত সোমবার বিকেলে শহরের পৌরসভা এলাকায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনে অবস্থিত হোটেল হিল এ্যাম্বাসেডরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিদ্যুৎ বিভাগ অভিযান পরিচালনা করে এবং এইসময় তাদের নিয়মিত সংযোগের পাশাপাশি পৃথক একটি অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে হোটেলটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ চলছিলো। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয় হোটেলটির। পরে ৩ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা জরিমানা করে পুনসংযোগ দেয়া হয় হোটেলে।
২০২০ সাল থেকে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করা এই হোটেলে সরেজমিনে দেখা যায় অন্তত ১২ টি এসির সংযোগ আছে। মূল মিটারটি প্রিপেইড হলেও বিকল্প একটি অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে এই হোটেলটি চলছিলো বলে অভিযোগ বিদ্যুৎ বিভাগের। শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি অভিজাত হোটেলের এমন অনৈতিক কান্ডে বিস্মিত বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারাও।
রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এরশাদ আলী জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে শহরের বড় বড় হোটেল গুলোতে অবৈধ সংযোগ আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করতে গেলে হোটেল হিল এ্যাম্বাসেডরে একটি অবৈধ সংযোগ পাই। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের দায়ে ৩ লাখ ৫২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার ব্যাংকের মাধ্যমে জরিমানার অর্থ জমা দেয়ার পর তাদের নতুন সংযোগ দেয়া হয়।
তবে জরিমানার বিষয়টি অস্বীকার করে হোটেল হিল অ্যাম্বাসেডর এর স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম জানান, দুটি মিটারের মধ্যে একটি মিটার দীর্ঘদিন আগে নষ্ট হয়ে যায়, সেটি অফিসকে জানানো হয়নি। অন্য কোন সমস্যা নাই।
হোটেল হিল অ্যাম্বাসেডর এর মিটার নষ্ট ছিল কিনা সেটা রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এরশাদ আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, না কোন মিটার নষ্ট ছিল না, সেখানে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। কেন নষ্ট মিটারের কথা বলছেন তিনি সেটি উনি জানেন।
এরশাদ আলী বলেন, তিনি প্রথমে বিষয়টি স্বীকার করেননি,পরে স্বীকার করায় আইন অনুসারে জেল জরিমানায় না গিয়ে তাকে জরিমানা প্রদানের সুযোগ দিই। তার ওখানে মূল মিটারটি প্রিপেইড এবং অন্য যে লাইনটি চলছিলো সেখানে কোন মিটার ছিলোনা। সরাসরি লাইন নিয়ে ব্যবহার করছিলো। পুরো বিষয়টির তথ্য প্রমাণ আমরা সংগ্রহে নিয়েছি। সে বৈধ লাইনটাতে কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করতেন এবং অবৈধটাতেই মূল পাওয়ার লোড ছিলো হোটেলের।
এই বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বিষয়টি স্বীকার করে জানান, অবৈধ সংযোগ ব্যবহারের অভিযোগে হোটেল হিল অ্যাম্বাসেডরকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে।
হিল অ্যাম্বাসেডর এর সত্বাধিকারি সাইফুল ইসলাম রাতে পাহাড়টোয়েন্টিফোর ডট কমকে বলেন, ‘আমাদের একটা মিটার ছিলো,সেটা নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় আর সেটি স্থাপন করিনি কিংবা করতে দেরী করেছি এবং বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগকে অবহিত করিনি। এটা আমাদের অনিচ্ছাকৃত ভুল। এরজন্য বিদ্যুৎ বিভাগ যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, সেটাই আমরা মেনে নিয়েছি। এটা আমাদের ইচ্ছাকৃত অপরাধ ছিলোনা। ’