মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা, মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনীর অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সভাপতি, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ গত ২৩ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টা ৪৯ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) রাঙামাটি জেলার সভাপতি সমীর কান্তি দে ও সাধারণ সম্পাদক অনুপম বড়ুয়া শংকর এক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
বিবৃতিতে প্রয়াত অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ’র প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ন্যাপ সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ সারাজীবন এ দেশের শ্রমিক-কৃষক-মেহনতী মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামেও তাঁর অবদান অসামান্য। মহান মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনী পরিচালনাসহ সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের দেশগুলোকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন প্রদানে তাঁর ভূমিকা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বিবৃতিতে সিপিবি নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ এর মৃত্যুতে দেশ একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক বিপ্লবীকে হারালো। নেতৃবৃন্দ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
এদিকে, গণমাধ্যমে প্রেরিত পৃথক বিবৃতিতে বর্ষীয়ান এই নেতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, রাঙামাটি জেলা সংসদ।
অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। এছাড়া ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতাযুদ্ধে তার ভূমিকা অবিস্মরণীয়। তাঁর জন্ম ১৯২২ সালে। ১৯৩৭ সালে রাজনীতিতে অংশ নেন। এই রাজনীতি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি।
১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে মোজাফফর আহমদ দেবীদ্বার থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তদানীন্তন মুসলিম লীগের শিক্ষামন্ত্রী মফিজুল ইসলামকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে নজির সৃষ্টি করেছিলেন তিনি।
রাজনীতিতে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ সততাকে ব্রত করেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।